বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অজিত পাল বলেছেন, অচিরেই দেশের চিনি শিল্পে সমৃদ্ধি আসছে। অপার সম্ভাবনাময় এই খাতকে লাভজনক করতে দেশের রাস্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের আধুনিকায়ন ও সহায়ক উৎপাদন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। গত মৌসুমে রাস্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলে ৬৯ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছিল। চলমান আখ মাড়াই মৌসুমে ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, মৌসুম শেষে উৎপাদন এক লাখ টন ছাঁড়িয়ে যাবে। চিনিকলগুলো চলতি মৌসুমে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টন আখ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। আগামী মৌসুমে ১৭ লাখ ৭১ হাজার টন আখ মাড়াই করে এক লাখ ৪০ হাজার টন চিনি উৎপাদন করা হবে। কৃষক পর্যায়ে আখ চাষে উৎসাহ প্রদান এবং তাদেরকে চিনিকলে আখ সরবরাহে আগ্রহী করতে মাঠ পর্যায়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি, উচ্চ ফলনশীল বীজ, গুণগতমানের রাসায়নিক সার সরবরাহ, ঋণ প্রদান, সাথী ফসল উৎপাদনে প্রণোদনা প্রদান, সময়মত আখের মূল্য পরিশোধ ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং আখ উৎপাদন ও সংগ্রহে নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করার জন্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। চিনিকলগুলোকে সারা বছর উৎপাদনে ব্যবহার, চিনিকলের উৎপাদিত সকল উপকরণকে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করে বিশ্বমানের বিয়ার, স্পিরিট, জুসসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। আখের জমিতে সোলার স্থাপন করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হবে। ‘র’ সুগার থেকে চিনি উৎপাদনের কথাও ভাবা হচ্ছে। চিনি শিল্পের সাথে দেশের পাঁচ কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এই শিল্পকে রক্ষা করতেই হবে। ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ার সকল দূর্নীতি দূর করা হয়েছে। সকল অনিয়ম রুখতে চালু করা হয়েছে অটোমেশন। কর্মরত সকলপক্ষের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে লক্ষ্য নির্ধারণ করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সকল প্রকার কেমিকেলমুক্ত চিনিকলের উৎপাদিত চিনি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক-এই প্রচারণায় সফলতা পাওয়ায় সারাদেশে উৎপাদিত চিনির বাজার সৃষ্টি হয়েছে। কোন চিনি আর অবিক্রিত নেই। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় নাটোরে স্থানান্তরের জন্যে গ্রহীত একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে বিবেচনার জন্যে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, দেশের বেশীরভাগ চিনিকল উত্তরাঞ্চলে হওয়ায় নাটোরে কর্পোরেশন কার্যালয় হলে নিবিড় মনিটরিং কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছনো সহজ হবে। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অজিত পাল রবিবার নাটোর চিনিকলের চলমান আখ মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। এসময় নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম জিয়াউল ফারুক, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) রুস্তম আলীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।