নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার খুলে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার শুরুতেই নাটোরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তৈরী হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এদিকে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে প্রতিষ্ঠানের সামনে রাখা হয়েছে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যাবস্থা। শ্রেণী কক্ষেও নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যাবস্থা। পরিমাপ করা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্র। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শতভাগ উপস্থিতি দেখা গেছে। নাটোর জেলায় প্রাথমিক,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক। গত বছর মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের কারনে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর সারাদেশের ন্যায় নাটোরেও বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ দেড় বছর এভাবেই বন্ধ থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ রাখতে ভার্চুয়াল ক্লাশ নেওয়া চলে আসছিল। বর্তমানে করোনা সংক্রমন হার কমতে শুরু করায় সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্তেই আজ শুরু হয়েছে স্বশরীরে হাজির হয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ।
নওশিন তাবাসসুম রিভা, জান ফাতেমা,রোদসী,আপন মাহমুদ,তানভীর মাহমুদ সহ আরো অনেক শিক্ষার্থীরা জানায়,শিক্ষা জীবনে দশম শ্রেনীকে অনেক গুরুত্বপূর্ন মনে করে তারা। কারণ তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনেক মিস করছিলেন। অনলাইন ক্লাশে ভার্চুয়াল লাইফটা থেকে যায়। বাস্তব লাইফের মত শিক্ষকদের সাথে সম্পর্ক ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক সহ পড়াশোনায় স্পিড ভালো থাকেনা। নির্দেশনা মেনে চললে আগামিতে তারা নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পারবে বলে মনে করে। অনেকদিন পর স্কুলে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে তাদের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাশ করতে পেরে আনন্দিত তারা। অনেকদিন পর স্কুলে এসে তাদের দেড় বছরের একঘেঁয়েমী পরিবেশ কাটাতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। স্কুলে এসে সহপাঠি সহ শিক্ষকদের দেখেই মনে আনন্দ হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর ভার্চুয়াল ক্লাশ করেছে তারা। কিন্তু সেখানে তাদের ভালো লাগেনি। এখন অনেকদিন পর এভাবে স্বশরীরে স্কুলে আসতে পেরে তারা সরকারকে ধন্যবাদ জানায়।
এই অভিভাবক জানায়, শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার আগ্রহ থাকলেও অভিভাবকদের মনে করোনা সংক্রমনের ভয় রয়েছে এখনো।
সরকারী বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে তারা। এছাড়াও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পর ভিতরে প্রবেশ করা সহ সকল প্রকার সরকারী নির্দেশনা মেনে তারা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করেছেন।
সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন, বলেন, এতোদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও তার প্রতিষ্ঠানে শতভাগ উপস্থিতি পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দ উৎসবের মত প্রতিষ্ঠানে হাজির হয়েছে। তারাও সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি পালন করছেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পওে সরকারের ১১ দফা ও ১৯ দফা মেনে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধান করে শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করবে এবং সারিবদ্ধভাবে শ্যেণীকক্ষ ত্যাগ করবে। সবাই নিয়ম মেনে চলবে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ম মানবে না তাদেও বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পওে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাণোচ্ছলভাব লক্ষ্য করা গেছে তাতে তারা আশাবাদি। তিনি মনে করেন যে ঘাটতিগুলো রয়েছে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আগামীতে সেগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে।।