ডেস্ক নিউজ
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার নতুন উপায় খুঁজে নিয়েছেন দেশের নারীরা। করোনা মহামারীর গত দুই বছর যখন পৃথিবীর বেশিরভাগই অচল, তখন অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছেন নারীরা। বর্তমানে দেশে ৩ লাখের বেশি ব্যক্তি ফেসবুক পেজে ব্যবসা করছেন। তাদের বেশিরভাগই রয়েছেন নারী। অনলাইনে কেনাবেচার কারণে বেড়েছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা। অল্পপুঁজিতে তারা অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করেছেন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। পারিবারিক কাজের ফাঁকে ঘরে বসেই অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাচ্ছেন তারা।
করোনাকালে অনলাইন ব্যবসাটা বেশ জমে ওঠে। এতে যেমন বেড়েছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা, তেমনই বেড়েছে ক্রেতা। যে অনলাইন ব্যবসাকে এক সময় মানুষ বিশ্বাস করতে পারেনি, আজ করোনা মহামারী আর লকডাউনের কারণে ওই অনলাইন ব্যবসা হয়ে উঠেছে বিকল্প। এটি বেশ ইতিবাচক একটা পরিবর্তন। বিক্রেতারা যেমন সততার সঙ্গে কাজ করছেন, ক্রেতারাও তেমনি তাদের আস্থা প্রকাশ করছেন অনলাইন ব্যবসার ওপর। এই নিউ নরমাল পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট অনেকাংশে দূর করেছে এফ-কমার্স বা ই-কমার্সভিত্তিক ব্যবসা। মানুষ বুঝতে পেরেছে ব্যবসাকে ডিজিটালাইজ করার গুরুত্ব। ফলে ভালো কাজ ও উদ্যোগের জন্য ক্রেতার আগ্রহও থাকছে আশানুরূপ।
অল্পপুঁজি নিয়ে হাতে তৈরি পণ্য, নানা রকমের পোশাক, প্রসাধনী, খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য- সবই কেনাবেচা হচ্ছে এখন ফেসবুকের মাধ্যমে। অনলাইনে প্রচার বেশ সহজ ও তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল। তাই ফেসবুকে গেলেই এখন চোখে পড়ে নারী উদ্যোক্তাদের সরব উপস্থিতি। কখনো তাদের পেজ থেকে পণ্যের ছবি, কখনো বা পণ্য নিয়ে নিজেই আসছেন লাইভে। ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ থেকে পণ্য পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত- সর্বত্রই আছে তাদের অংশগ্রহণ।
এ বিষয়ে অনলাইন পেজ সদাইকাব্য ও ঝাঁপির স্বত্বাধিকারী ফারজানা হোসেন তিথি বলেন, অফলাইনে বিজনেস করতে গেলে বেশ পুঁজি লাগে। দোকান নিতে হয়। এতে বেশ বড় ইনভেস্টমেন্ট প্রয়োজন হয়। অনলাইনের ক্ষেত্রে ইনভেস্ট শুধু প্রডাক্টের ওপরই করা হয়। তাই অনলাইনটাই বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। তবে অনলাইন বা অফলাইন- যেখানেই উদ্যোক্তা হোন না কেন, মূল উদ্দেশ্য থাকতে হবে ভালোমানের পণ্য দেওয়া। মান ভালো হলে অনলাইন, অফলাইন- সবখানেই বিক্রি সম্ভব। তবে ধৈর্য থাকতে হবে অনেক। কারণ শুরুতেই সবকিছু সেল হয়ে যায় না। কাস্টমারবেজ তৈরি করার জন্য অনেক সময় দিতে হয় অনলাইন ব্যবসায়। একই সঙ্গে ইউনিক মার্কেট করে কাস্টমার ইন্টারেস্ট তৈরিরও একটা বিষয় থাকেই। পণ্য ভালো এবং ইউনিক হলে রেন্সপন্স পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইনে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়লে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতেও। তবে নারী উদ্যোক্তা হওয়ার মূলে যদি কিছু থেকে থাকে, তা হলে বলতেই হয় পারিবারিক সমর্থনের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রায় নারীদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যেটি পেতে হবে, সেটি হলো ফ্যামিলি সাপোর্ট। আর্থিক সাপোর্ট দিতে না পারলেও মেন্টালি সাপোর্ট দিলেই যে কোনো নারীর দ্বারা অনেক কিছুই করা সম্ভব।