পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেছেন, সারাদেশে বিভিন্ন নদী ও জলাধার দখলকারী ৪৪ হাজার অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরী করা হয়েছে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ১১ হাজার নদী ও খাল খননের কাজও করা হচ্ছে। নদীর দুষন রোধ করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান সরকার পানি আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে। আইন মন্ত্রণালয়ে আইনের বিধি তৈরীর কাজ শেষের পথে। আমরা দ্রুতই এই আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবো। দেশের ১১ হাজার নদী ও খালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৪৮টি খনন কর হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে দুই হাজার ১০০ এবং পর্যায়ক্রমে সবক’টি খনন করা হবে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা গেলে নদী ভাঙন রোধ হবে, জলাবদ্ধতা রোধ হবে, সেচের পরিধি বাড়বে, নদীর পারে বনায়নের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে জীব বৈচিত্র। আর এভাবে দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় করতে পারলে দেশের জিডিপি ১০ শতাংশে পেঁছে যাবে।
পানি সম্পদ সচিব আরো বলেন, পানি সম্পদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিদ্যমান সকল স্লুইস গেট অপসারণ করা হবে। পানির চলাচল ব্যবস্থাপনার জন্যে রেগুলেটর থাকবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় সারাদেশে ২২টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭ হাজার কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এবং ১০ লাখ হেক্টর জমির সেচ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নারদ নদের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শহরের মধ্যে এই নদীর উভয়পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করা হবে। শত বছরের ডেল্টা প্লানে দেশের ছয়টি ভৌগলিক এলাকার মধ্যে একটি হচ্ছে জলাশয় এলাকা-যাকে কেন্দ্র করে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সমাধা হবে বলেও সচিব উল্লেখ করেন। আজ রোববার নাটোরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চলনবিল এলাকার প্রাকৃতিক জলাধার পুনরুদ্ধার এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে সভায় নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ড. আব্দুল আজিজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীসহ নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানবৃন্দ, পৌরসভার মেয়র ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।