মুজিববর্ষে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এবার ফরিদপুরের গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১ হাজার ৪৭০ পরিবারের। গৃহের অভাব লাঘবে মুখে হাসি ফুটেছে তাদের। ৯টি উপজেলাতে এক হাজার ৪৭০টি বাস্তুহারা পরিবারকে সেমিপাকা ঘর করে দেয়া হচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই এসব ঘর জমিসহ সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। ঘরের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এই সেমিপাকা ঘর তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২ ফুট প্রস্থের ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এসব ঘর করতে সবমিলিয়ে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
উপকারভোগী শেখ মোসলেম (৭৫) জানান, তার নিজের কোনো ঘর নেই। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে গট্টি ইউনিয়নের ঝুনাখালীতে পরের জমিতে পাটখড়ি ও পলিথিন দিয়ে টং ঘর তুলে থাকতেন। এখন এই ঘর পেলে নিজের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। একইভাবে এমন অনিশ্চিত উদ্বাস্তু জীবনযাপনের কথা জানালেন একই এলাকার রাশেদ খাঁ (৭০), মো. আবুল কালাম (৫৫), বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের দেলাননগরের লাল মিয়ার স্ত্রী সাকিরননেসা (৬৫), নগরকান্দার কোদালিয়া শহীদনগর গ্রামের শেখ মোজাম (৬৫), লিপি বেগমসহ (৫৩) অন্যরা।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ছিন্নমূল ও ভ‚মিহীন পরিবারের প্রাপ্ত তথ্য তারা স্থানীয় ভ‚মি অফিস থেকে তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করেছেন। আর নির্মাণকাজ যাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য নিয়মিত তদারকি করছেন তারা। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুর রহমান বলেন, সুবিধাভোগীদের এসব ঘরসহ জমি কবুলিয়াত করে দেয়া হবে। প্রতিটি পরিবার এতে গড়ে প্রায় ৩ শতাংশ জমি পাবে ঘরসহ।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, সংশ্লিষ্টদের নিবিড় তত্ত¡াবধানে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের এসব স্বপ্নের ঠিকানা ‘স্বপ্ন নীড়’। জেলা প্রশাসক অতুল সরকার সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নে নির্মিতব্য এই ঘর নির্মাণকাজ সম্পর্কে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহারস্বরূপ এসব আশ্রয়স্থল করে দেয়া হচ্ছে। এই কাজ বাস্তবায়নে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গৃহহীনদের জন্য সদর উপজেলায় ২৯২টি, ভাঙ্গা উপজেলায় ২৫০টি, আলফাডাঙ্গায় ২২০টি, সদরপুরে ১৭৮টি, চরভদ্রাসনে ১৫০টি, মধুখালীতে ১৪৮টি, নগরকান্দায় ১০৫টি, বোয়ালমারীতে ৯২টি ও সালথা উপজেলায় ৩৫টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।