সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) যে কল রেকর্ডটি শোনা যাচ্ছে তা শতভাগ সত্য বলে জানিয়েছেন চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা। এদিকে সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী তা অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন চৌধুরী দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার কথাগুলো সুপার এডিট করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রকাশিত কল রেকর্ডের ভয়েস আমার না।
এ সময় তিনি প্রশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, পারলে প্রশাসন এটি প্রমাণ করুক যে প্রকাশিত কল রেকর্ডটি সুপার এডিট করা না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা নিক্সন মহোদয়ের যে কল রেকর্ডটি শুনছেন তা শতভাগ সত্য। এমনকি প্রকাশিত কল রেকর্ডের দাঁড়ি-কমা পর্যন্ত সঠিক। এখানে এডিট করার কোনো প্রশ্নই নেই। আপনারা যা শুনেছেন তিনি ওভাবেই আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।
এ সময় ইউএনও আরও বলেন, তিনি যখন (এমপি মহোদয়) এসিল্যান্ডকে হুমকি দেন, তখন আমি তার নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি তাৎক্ষণিক লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক- ডিসি স্যারকে অবগত করি এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও ক্লিপটি প্রেরণ করি।
নির্বাচনের দিন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারকেও হুমকি দিয়েছিলেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন।
চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে ভাঙা উপজেলার এসিল্যান্ড যাকে আটক করেছিলেন তাকে নিয়ে কথা বলেন নিক্সন। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শনিবার (১০ অক্টোবর) এ দুটি ঘটনা ঘটে।
এ দুটি ঘটনার ভিডিও এবং অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর জেলা শাখা রোববার সভা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন) আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবেও বলে জানান তিনি। এর আগে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিক্সন চৌধুরীর আশোভন আচরণের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেয়া হয়।