সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুটি করে মোট চারটি মামলা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে চকবাজার থানায় র্যাবের পক্ষ থেকে এসব মামলা করা হয়। চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ইরফান ওয়াকিটকি ব্যবহার করতো চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও আধিপত্য বিস্তারের কাজে। সে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতো। তার বাড়ি থেকে বিদেশি মদসহ অন্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে দুটি-দুটি করে মোট চারটি মামলা করবে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, ইরফানের সঙ্গে মতের অমিল হলেই টর্চার সেলে এনে চালানো হতো নির্যাতন। মূলত এলাকার চাঁদাবাজি এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি এসব করতেন।
এদিকে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ইরফানকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
অন্যদিকে, ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে আদালতের কাছে তাদের প্রত্যেকের জন্য ৭ দিন করে রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব।
এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।