ডেস্ক নিউজ
‘আমরা বিশ্বাস করি আন্তরিকতা, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল ভিত্তি। বাংলাদেশ ও জাপান সেই মূল্যবোধ ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে।’
জাপানকে বাংলাদেশের ‘বিশ্বস্ত বন্ধুদের অন্যতম’ উল্লেখ করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গঠনে জাপান ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সিকে (জাইকা) পাশে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে জাইকার সহযোগিতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের পথ ধরে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উন্নীত করতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার স্বীকৃতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
‘আমি আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে জাপান ও জাইকা আমাদের সঙ্গে থাকবে।’
‘জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম এবং একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো টোকিও সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত রচনা করেন। আমার বাবার উত্তরাধিকার বহন করা আমার জন্য সম্মানের। ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে আমি জাপান সফর করেছি।’
‘আমরা বিশ্বাস করি আন্তরিকতা, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল ভিত্তি। বাংলাদেশ ও জাপান সেই মূল্যবোধ ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে।’
২০১৪ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমরা জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারত্ব চালু করেছি। আমাদের এই অংশীদারত্ব অদূর ভবিষ্যতে একটি কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত হওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশ ও জাপান চমৎকার সম্পর্ক উপভোগ করে আসছে বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে জাপান এবং দেশটির জনগণের সমর্থন ও অবদানের জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
জাইকা ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য অনুদান সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশে আর্থিক সহযোগিতা শুরু করে বলেও জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে জাইকার আর্থিক সহায়তার পোর্টফোলিও এখন ২৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু, ঢাকা শহরে মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প জাইকার সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন।’
বাংলাদেশ-জাইকা সহযোগিতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পাঠানো ভিডিও বার্তায় দেশটির সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং দেশটির বন্ধুভাবাপন্ন জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।