ডেস্ক নিউজ
রাজধানীর প্রান্তঘেঁষা প্রাচীন জনপদ হওয়া সত্ত্বেও যুগের পর যুগ মানিকগঞ্জ ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। মানিকগঞ্জের মানুষকে ভোগ করতে হয়েছে উন্নয়ন বঞ্চনা আর অবহেলার সীমাহীন গ্লানি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে র্বতমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর একযুগে মানিকগঞ্জ জেলায় একটি ৫শ শয্যার হাসপাতালসহ মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স, জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, সড়ক-মহাসড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, সরকারী ভবন, শিক্ষা খাতের ব্যাপক উন্নয়ন, কৃষি খাতে সাফল্য, আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পর্যটন কেন্দ্র, সাংস্কৃতিক, প্রাণিসম্পদসহ বিভিন্ন সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন সুসম্পন্ন হয়েছে, চলমান রয়েছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। ৩টি সংসদীয় আসন, সাতটি উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৮ লাখ মানুষের এই জেলা এক কথায় এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। জেলাবাসীর কাছে এই উন্নয়ন চিত্র আজ দৃশ্যমান এবং গর্বের বিষয়।
বর্তমান সরকারের টানা মেয়াদকালের শুরু থেকেই উন্নয়নের পাল তুলেছে পিছিয়ে থাকা মানিকগঞ্জের জনপদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, সাহস, মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে সারাদেশের মতো মানিকগঞ্জেও ঘটেছে অভাবনীয় উন্নয়ন, ঘুরে দাঁড়িয়েছে মানিকগঞ্জ। শুধু কৃষি ও চাকরিজীবী মানুষের জেলা এখন সকল ধরনের মানুষের কর্মব্যস্ততার পদচারণায় মুখর। মানিকগঞ্জ এখন খাদ্যউদ্বৃৃত্ত ও কর্মক্ষেত্রের জেলা। যার হাল ধরেছেন প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের তিন দিকপাল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনা মহামারী মোকাবেলায় সফল এই জেলার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এমপি, মানিকগঞ্জ-৩ আসন। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বিসিবির পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি, মানিকগঞ্জ-১ আসন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি, মানিকগঞ্জ-২ আসন। এছাড়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিনসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও জেলার বিভিন্ন সরকারী দফতরের কর্মকর্তগণ মিলে সমগ্র জেলার সার্বিক উন্নয়নে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া চলমান বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প শেষ এবং পাইপলাইনে থাকা উন্নয়ন পরিকল্পনা শুরু হলে মানিকগঞ্জ হবে দ্রুত উন্নয়নের উদাহরণ।
স্বাস্থ্য খাত ॥ স্বাস্থ্য খাতে মানিকগঞ্জ ছিল চরমভাবে উপেক্ষিত, অবহেলিত। রাজধানীর পাশের জেলা হবার পরও মানিকগঞ্জের মানুষ তাদের ন্যূনতম স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। সামান্য একটু অসুস্থ হলেই যেতে হতো নিকটবর্তী ঢাকা শহরে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর র্নিবাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে প্রতিষ্ঠা করেছে কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ ও ৫শ’ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল। মানিকগঞ্জ জেলার হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই এর সুফল ভোগ শুরু করেছে। শুধু মানিকগঞ্জই নয়; আশপাশে অন্যান্য জেলার অসংখ্য মানুষ সুবিধা ভোগ করছে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল চালু হওয়ায় চিকিৎস্যা সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ১০০ শয্যার জরাজীর্ণ হাসপাতালটির পাশেই নবনির্মিত সুরম্য ৮ তলা ভবনের এই হাসপাতালে অত্যাধুনিক সবধরনের সুবিধাসহ স্বাস্থ্য সেবা শুরু হয়েছে। এখন মানিকগঞ্জের তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা ভোগ করছে আপামর জনসাধারণ।
মানিকগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা ॥ জেলা সদরে একটি পূর্ণাঙ্গ ডায়াবেটিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। সে প্রত্যাশা পূর্ণ হয়ে পৌর এলাকার হিজুলীতে নির্মিত হয়েছে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক পূর্ণাঙ্গ ডায়েবেটিক হাসপাতাল।
মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে সরকারী নার্সিং ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটি চালুর ফলে মানিকগঞ্জের কর্মমুখী তরুণ-তরুণীরা নার্সিং পেশার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বের হচ্ছে প্রশিক্ষিত নার্স।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ॥ উন্নয়নের মহাসড়কে যোগ হয়েছে এশিয়ান হাইওয়ে খ্যাত, এক সময়ের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। যা এখন ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়ক নামে পরিচিত। মানিকগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে গড়ে ওঠা মহাসড়কটির এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে পরিচিতি থাকলেও এই মহাসড়ক ছিল প্রচ- রকমের অবহেলিত। যে কারণে এই মহাসড়কটিকে মৃত্যু ফাঁদের কুখ্যাতি বহন করতে হয়েছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই মহাসড়কের জরাজীর্ণ সেতু মেরামত,নতুন করে নির্মাণ, বিপজ্জনক বাঁকগুলোকে ঠিক করাসহ ঢাকা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত এই মহাসড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে। গত একযুগে শত শত কিলোমিটার পাকা সড়ক ও অসংখ্য ছোটবড় সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে মানিকগঞ্জের যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত হয়েছে অনেক দৃষ্টিনন্দন সেতু।
ঢাকা-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ॥ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটির ২৯ কিলোমিটার প্রশস্তকরণ, পার বাঁধানোসহ সার্বিক উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়ে তা সুসম্পন্ন করেছে। দৃষ্টিনন্দন এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি এখন জরুরী প্রয়োজনে ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়কের বাইপাস সড়ক হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকা- মানিকগঞ্জ ও পাটুরিয়ার দূরত্ব কমে এসেছে ১৫ কিমি কমে এসেছে যাতায়াতের সময়।
ফোর লেন সড়ক ॥ ঢাকা-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলা শহরের মাঝ দিয়ে বেউথা এলাকার ঢাকা-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সাথে যুক্ত হয়েছে। যা মানিকগঞ্জ শহরের সৌন্দর্যকে শতগুণে বর্ধিত করেছে। তবে নবনির্মিত ফোর লেনের মধ্যবর্তী অংশে অবস্থিত অতিসরু ও জরাজীর্ণ খালপাড় ব্রিজটি প্রশস্থকরণ কাজের অগ্রগতি হলে এই ফোর লেনের কার্যকারিতা এবং সৌন্দর্য দুটোই দৃষ্টিনন্দন হবে।
কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৩০০ মিটার দীর্ঘ তিন বাঁকের দৃষ্টিনন্দন সেতুসহ অসংখ্য দীর্ঘ সেতু ও শত শত দীর্ঘ পাকা সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। সেতুগুলোর মধ্যে অন্যতম হরিরামপুর উপজেলা থেকে সদর উপজেলার বালিরটেক সিংগাইর উপজেলা হয়ে ঢাকা পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কে কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৩০০ মিটার দীর্ঘ বালিরটেক এলাকায় তিন বাঁকের সেতুটি এখন জেলা তথা দেশের মধ্যে অন্যতম সুন্দর একটি সেতু।
ঢাকা-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া মহাসড়কের সদর উপজেলার গোলড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বেশ কয়েকটি বৃহৎ সেতু নির্মাণ এবং সিঙ্গেল লেন সড়কের পরিবর্তে ডবল লেনের পাকা সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সাটুরিয় উপজেলাকে জেলা সদরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এ দুটি দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের ফলে সাটুরিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা পূরণ হয়েছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাদেশ হাট থেকে তিল্লী, দড়গ্রাম হয়ে সাটুরিয়া উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ সহজতর করার জন্য পাকা সড়কসহ ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল তিনটি সেতু। বাংলাদেশ হাট থেকে তিল্লী, দড়গ্রাম, সাটুরিয়াসহ পাকুটিয়া হয়ে যোগ হয়েছে টাঙ্গাইল জেলার সাথে। এতে করে এই এলাকার গ্রামগুলোর হাজার হাজার মানুষ অভাবনীয় সুবিধা ভোগ করবে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাদেশ হাট থেকে দীর্ঘ কার্পেটিং সড়ক তিল্লী এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর ওপর বিশাল সেতু পার হয়ে দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে যোগ হয়েছে। এর ফলে এ এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর একটি বড় দাবি পূরণ হলো।
হরিরামপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঝিটকা বাজার থেকে গোপীনাথপুর, বাল্লা,কাঞ্চনপুর হয়ে শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের সাথে যোগ হয়ে শিবালয় উপজেলা সদরের সাথে আরামদায়ক যোগাযোগের সৃষ্টি করেছে এই দৃষ্টিনন্দন নতুন ডবল লেনের সড়ক অবকাঠোমো ও প্রয়োজনীয় সেতু। এর ফলে কৃষিপ্রধান হরিরামপুর এবং শিবালয় উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের বিশেষ করে কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বড় অন্তরায় দূর হয়েছে।
যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স ॥ পদ্মা,যমুনা,কালীগঙ্গা,ধলেশ^রী নদী বেষ্টিত মানিকগঞ্জ জেলা ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন ও বন্যাবিপর্যস্ত জেলা হবার ফলে এই জেলায় বেকারত্বের হার ছিল অন্যান্য জেলার তুলনা অনেক বেশি। যুব ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার জোকায় নির্মাণ করেছে যুব কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। এই প্রকল্পের সুফল মানিকগঞ্জের যুব সম্প্রদায় ইতোমধ্যেই ভোগ করতে শুরু করেছে। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে কর্মহীন তরুণ ও যুবকদের মধ্যে। এ জেলায় প্রবাসীদের আয়ের অবদানও উল্লেখযোগ্য। এই প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স থেকে প্রশিক্ষিত যুবকরা বিদেশে গিয়ে তাদের আয়ের টাকা দেশে পাঠিয়ে উন্নয়নে অংশ নেবেন।
পাটুরিয়া ঘাট এলাকা দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটন কেন্দ্র ॥ পাটুরিয়া ঘাট এলাকা দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটন কেন্দ্র করার লক্ষ্যে একনেকের সভায় (পাটুরিয়া ঘাট উন্নয়ন) এর জন্য প্রায় ৭ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার ফলে পদ্মা তীরবর্তী পাটুরিয়া ঘাট এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটতে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই এলাকায়ই ঘোষিত আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হলে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে মানিকগঞ্জের পদ্মার পার।
এ ছাড়া এই পাটুরিয়া ঘাট এলাকা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দুই সহস্রাধিক যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে। মাঝে মাঝেই যানজটের কবলে পড়ে শিশু, নারীসহ শত শত যাত্রী চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন এই ঘাট এলাকায়। এই বিবেচনায় পাটুরিয়া ঘাটকে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটন এলাকায় রূপ দিতে বড় ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। এর জন্য পাটুরিয়া এলাকায় বরাদ্দ হয়েছে ৭শ’ কোটি টাকা। ফলে পাটুরিয়া ঘাটের বিড়ম্বনা আর থাকবে না। ঈদের আগে সময়মতো বাড়ি গিয়ে পরিবারের সাথে ঈদের নামাজ আদায় ও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে না।
পদ্মার তীরে ক্রিকেট স্টেডিয়াম ॥ মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর পারে মনোরম পরিবেশে আন্তর্জাতিকমানের ‘শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদীয় কমিটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্প্রতি স্থান পরিদর্শন করেছেন। এর প্রাথমিক কাজ শুরুর ঘোষণাও দিয়েছেন তারা। এর ফলে মানিকগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার হয়েছে ক্রীড়ামোদীসহ সকল মানুষের মধ্যে।
যমুনা নদীর পারে ইকোনমিক জোন করার লক্ষ্যে এই উপজেলার পুরাতন আরিচা ঘাট এলাকা বেছে নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘিওর উপজেলায় ‘শেখ কামাল আইটি পার্ক’ করারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এসব উন্নয়নের ফলে মানিকগঞ্জসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। দূর হবে এই জেলার শিক্ষিত যুব সমাজের দুর্দিন।
হাজারী গুড় ও পদ্মার ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ॥ মানিকগঞ্জের ঐতিহাসিক হাজারী গুড় ও পদ্মার ইলিশের সুনাম এখনও রয়েছে দেশ-বিদেশে। সরকার জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করায় এ অঞ্চলে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। সরকারের কঠোর নজরদারির ফলে আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে ব্রিটিশ আমল থেকে তৈরি হওয়া মানিকগঞ্জের বিখ্যাত হাজারী গুড়। মানিকগঞ্জে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির সমারোহ ঘটছে বর্তমান সময়ে। যা বিপুল পরিমাণে সারাদেশে সরবরাহ হচ্ছে এই জেলা থেকে।
শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়ন ॥ মাানিকগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অবকাঠামোগত দিক থেকে সারাদেশের মধ্যে অনেক পশ্চাৎপদ অবস্থায় ছিল। শিক্ষাবান্ধব বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত দশ বছরে জেলায় স্কুল, কলেজ সরকারীকরণসহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে। বিজ্ঞান গবেষণাগার,আইসিটি ভবন নেই এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানিকগঞ্জে দুর্লভ।
৭টি উপজেলায় ৬৮টি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩/৪ তলাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। এর মধ্যে সিংগাইর উপজেলায় ১৫টি, সদর উপজেলায় ১১টি, শিবালয় উপজেলায় ৮টি, হরিরামপুর উপজেলায় ১৩টি, ঘিওর উপজেলায় ৯টি, সাটুরিয়ায় উপজেলায় ৬টি ও দৌলতপুর উপজেলায় ৬ টি।
৭টি উপজেলায় ৪২৪ টি সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জ সদরে ৯২টি, ঘিওর উপজেলায় ৬৫ টি, সিংগাইর উপজেলায় ৬২ টি, সাটুরিয়া উপজেলায় ৫৫ টি, হরিরামপুর উপজেলায় ৫৫ টি, দৌলতপুর উপজেলায় ৫২টি এবং শিবালয় উপজেলায় ৪৩ টি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
জেলা পরিষদের ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’সহ নানা কর্মকান্ড ॥ জেলা পরিষদের উদ্যোগে মানিকগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ডিসি কোর্ট সংলগ্ন বিশাল পুকুরকে ঘিরে বড় আয়োজনে নির্মিত হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকে ভাস্বর করে রাখার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’। আগামী ডিসেম্বরে এর কাজ শেষ হলে জেলা শহরের সৌন্দর্যবৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে। এখানে স্থান পাবে ’৫২ থেকে ’৭১ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর কর্মের প্রতিচ্ছবি।
মানিকগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুতায়ন শেষ হয়েছে ॥ দেশের ব্যাপক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জ জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন শেষ হয়েছে। সারা জেলায় ৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৯৩ টি পরিবার ও প্রতিষ্ঠান বিদ্যুত সংযোগ পেয়েছেন, ৭০২৪ কিলোমিটার বিদ্যুত লাইন স্থাপন করা হয়েছে; যা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ‘দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া’। নতুন নতুন ঘরবাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে চাহিবামাত্রই বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের এমপি – সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম কাঁধে কাধ মিলিয়ে মানিকগঞ্জের কোণায় কোণায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়েছেন। যে মানিগঞ্জের যে কোন একটি গ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে ফিরে আসতে দুদিন লাগত, সেখানে আজ সকালে রওনা দিয়ে কাজ সেরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসছেন। জেলা সদর থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন এমনকি গ্রাম পর্যন্ত পাকা রাস্তা হয়েছে, বড় বড় ব্রিজ, কালভার্ট হয়েছে। জেলা সদরে কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ ও ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল, ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল, ৫০ শয্যার ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, শহরের মাঝখানদিয়ে দৃষ্টিনন্দন আলো ঝলমল ফোর লেন সড়ক, কালিগঙ্গা নদীর ওপর বিশাল তিন বাঁকের দৃষ্টিনন্দন সেতু, ঘিওর যুব প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম (প্রক্রিয়া শুরু), জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন। অনেক স্কুল, কলেজ সরকারী হয়েছে, প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩/৪ তলা ভবন হয়েছে। পদ্মা, যমুনা ভাঙ্গন রোধে বাঁধসহ অসংখ্য বড় বড় কাজ সমাপ্ত ও চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মানিকগঞ্জবাসীকে যে উন্নয়ন দিয়েছেন আমরা আশা করি সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
মডেল মসজিদ ॥ জেলার ৭টি উপজেলা ও একটি জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই মডেল মসজিদের শিবালয় উপজেলার মডেল মসজিদের কাজ শেষ, সাটুরিয়া ও ঘিওর উপজেলা মডেল মসজিদের কাজ শেষেরদিকে। বাকীগুলোর কাজ চলমান। জেলা মডেল মসজিদ ৪ তলা এবং উপজেলা মডেল মসজিদ ৩ তলা। মসজিদগুলোর প্রতিটিতে ১৭ টি দপ্তর ইসলামী কার্যক্রম চলবে।
মানিকগঞ্জ শহরের খাল উন্নয়ন ॥ মানিকগঞ্জ শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বহু প্রাচীন একটি খাল। দখল, দূষণ, মাটি ভরাটের ফলে এককালের মনোমুগ্ধকর খালটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি পৌরসভা এই খালটিকে দখলমুক্ত ও সংস্কার করে, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, সারাবছর পানি ধরে রেখে নানা ধরনের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি শেষ হলে মানিকগঞ্জ পৌরসভার জনগণের একটি বড় দাবি পূরণ হবে।
নদী ভাঙ্গন রোধে মহাকর্মযজ্ঞ ॥ পদ্মা, যমুনা, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গার ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত ছিল মানিকগঞ্জের চারটি উপজেলা। বিশেষ করে পদ্মা এবং যমুনার ভাঙ্গন ছিল ভয়াবহ। এই ভাঙ্গনের ফলে প্রতিবছর শত শত মানুষ তাদের বাস্তুভিটা হারাত এবং নষ্ট হতো কৃষিজমি। নদীর এই ভাঙ্গন রোধে গ্রহণ করা হয়েছে মহাপরিকল্পনা। পদ্মার ভাঙ্গন থেকে হরিরামপুর উপজেলা রক্ষায় ইতোমধ্যইে পদ্মা তীরে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধ নির্মিত হয়েছে। এই পদ্মার তীরে আরও ৩০ কিলোমিটার বালুর বস্তা ফেলে তাৎক্ষণিকভাবে শত শত পরিবারকে রক্ষা করা হয়েছে। যমুনার ভাঙ্গন রোধে দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলার বড় একটি অংশে স্থায়ী বাঁধ করা হয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলায় ধলেশ্বরী নদীর ভাঙ্গন রোধেও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পদ্মা, যমুনা, ধলেশ^রী নদীর ভাঙ্গন রোধে অন্যান্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স ॥ মানিকগঞ্জ শহরে আধুনিক মিলনায়তন বা শিল্পকলা একাডেমির নিজস্ব ভবন ছিল না। সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মানিকগঞ্জে নির্মিত হয়েছে ৭শ’ আসনের অত্যাধুনিক মিলনায়তনসহ শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স। যা জেলার শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে অসামান্য ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। জেলা সদরে নতুন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। প্রবাসে চাকরি করতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা পাচ্ছে মানিকগঞ্জের গ্রামীণ জনপদের মানুষ।
প্রশাসনিক উন্নয়ন ॥ সিংগাইর ও হরিরামপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ৪ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। মানিকগঞ্জ-গড়পাড়া সড়কের পাশে মানিকগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম চালু হয়েছে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে জেলার ৭টি উপজেলায় নতুন ৭টি ফায়ার স্টেশন করার কাজ। জেলা সদরে নির্মিত হয়েছে ১০ তলা জুডিসিয়াল ভবন, জেলা নির্বাচন কার্যালয়, মানিকগঞ্জ জেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সিংগাইর উপজেলায় টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, জেলা রেজিস্টার
ভবন, জেলা রের্কড রুম ভবন, জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও তথ্য কেন্দ্রের ৪ তলা ভবন। বেউথা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। গণগ্রন্থাগার ভবন, ৭টি উপজেলায় ৩৮টি ইউনিয়নে নির্মিত হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। এ সমস্ত কমপ্লেক্সে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সরকারী দফতরের সেবা পাচ্ছেন গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। জেলায় নতুন করে সদর ও ঘিওর উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ হয়েছে। একই সাথে জেলার ৭টি উপজেলায় ২৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ২টি পৌর ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেলের কার্যালয় ও বাসবভন, শহরের গঙ্গাধরপট্টি ৪ তলা পুলিশ ফাঁড়ি, ঘিওর বানিয়াজুড়ি ও হরিরামপুর চর এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ৪ তলা ভবনের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। জেলার ৬টি থানায় (পুলিশ) নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। চলছে জেলা পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণের কাজ।
দেশ বিখ্যাত হস্তশিল্প ॥ মানিকগঞ্জের হাতের কাজের পাঞ্জাবি, থ্রিপিস ও নক্সীকাঁথা রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। হাতের কাজের পাঞ্জাবি, থ্রিপিস ও নক্সীকাঁথা রাজধানীর বেশিরভাগ বড় বড় নামীদামী শোরুমে সরবরাহ হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ব্র্যাকের পাঞ্জাবির বড় একটি অংশ সরবরাহ হয় মানিকগঞ্জ থেকে। একাজের সাথে গ্রামের শত শত গৃহিণী সারাবছর সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাতের সেলাই কাজ করে বাড়তি আয় করছে।
ঐতিহাসিক নিদর্শন ও পর্যটন কেন্দ্র ॥ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে ঐতিহাসিক নিদর্শন। যা এখন পর্যটন কেন্দ্রে রুপান্তরিত হয়েছে। মানিকগঞ্জে সাটুরিয়া উপজেলায় বালিয়াটি জমিদারবাড়ির ৪টি সিংহদ্বারের ভেতর বিশাল আকারের ৪টি অট্টালিকা, ৬টি পাকা ঘাটলাসহ বিশাল পুকুর ও অন্যান্য স্থাপনা দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করে। পর্যটন কর্পোরেশন এই জমিদারবাড়িটিকে সম্প্রতি পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করে ব্যাপক উন্নয়ন করার ফলে সারাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের আগমনে সারাবছর মুখরিত থাকে।
শিল্প উদ্যোগ ॥ সারাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ঢাকা-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া সড়কের মানিকগঞ্জ এলাকার সাটুরিয়া, সদর, ঘিওর, শিবালয় উপজেলা এবং হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের দুইপাশ ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে ছোটবড় বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা ও পাওয়ার প্ল্যান্ট, কৃষি খামার। এ কারণে এ সমস্ত এলাকার জমির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। একদিকে জমি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষক, পাশাপাশি কর্মসংস্থান হচ্ছে স্থানীয় যুবক ও কর্মক্ষম ব্যক্তিরা। আগামী অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই মানিকগঞ্জ হবে দেশের উন্নয়নের রোলমডেল। এ কারণেই মানিকগঞ্জের আপামর জনসাধারণের ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে আগামীদিনে তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রাখার জন্য এই উন্নয়নের ব্যানার সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সুসংগঠিত হয়ে একযোগে কাজ করে যাবে।
এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জবাসীর কিছু দাবি ॥ ১. সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা-মানিকগঞ্জ- পাটুরিয়া রেললাইনের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষসহ মানিকগঞ্জবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করা ২. হরিরামপুর, শিবালয়, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া উপজেলার পদ্মা-যমুনা-ধলেশ্বরী নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা ৪. মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনা পারে এবং ঢাকা-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া-মহাসড়কের মানকিগঞ্জ এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা ৫. মানিকগঞ্জ জেলার অনেক প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ রয়েছে। যারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম, কিন্তু মাঠের অভাবে তা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। অন্তত জেলা সদরে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম (ক্রিকেট, ফুটবল একসাথে) হওয়া খুবই জরুরী ৬. জেলা শহরের পৌরসভাকে দৃষ্টিনন্দন করতে শহরের মাঝখানদিয়ে বয়ে যাওয়া খালটির ব্যাপক উন্নয়ন করে পয়ঃনিষ্কাশন, বৃষ্টি ও ওয়েস্টেজ পানি নিষ্কাশন, বৃহৎ আকারের কমিউনিটি সেন্টার, শিশুপার্ক করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে শহর তথা পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ জরুরী ৮. পদ্মা-যমুনার মাঝখানে হরিরামপুর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার ৫টি বৃহৎ চরাঞ্চল ও এর তীর ঘেঁষে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলে কর্মক্ষেত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া ৯. চলমান প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন ও সরকার ঘোষিত সিদ্ধান্তের প্রকল্পগুলো দ্রুত শুরু করা।