ডেস্ক নিউজ
দেখতে দেখতে চলে যাচ্ছে আরেকটি বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে বিশ্ববাসী। নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বিগত বছরের পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মিলিয়ে নিচ্ছে সবাই। পাওয়া না পাওয়ার হিসাবে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের সর্বসাধারণ। ২০১৯ সাল ছিল দুর্বার গতির উন্নয়নের। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রচেষ্টার দরুন দেশে ছিল স্থিতিশীলতা। দেশ এগিয়েছে উন্নয়নের মহাসড়কে। ২০১৯ সালের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন চিত্র নিয়ে নিউজ বাংলার আলো‘র এই প্রতিবেদন।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ভেল্কি:
লোড শেডিংয়ের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে জনগণ আগে বলতো ‘কারেন্ট যায় না, মাঝে মাঝে আসে।’ বর্তমান বিদ্যুৎ খ্যাতের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২,৭২৭ মেগাওয়াট। দেশের ৯৫ শতাংশ জনগণ এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। এছাড়া খুব শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যার প্রথম ইউনিট অচিরেই ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। অতএব বলা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভেল্কি দেখিয়েছে সরকার।
যোগাযোগ খাতে দুর্বার গতি:
একটি দেশ কতটা উন্নত তা ফুটে ওঠে সে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায়। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল ও উড়াল সড়ক ছাড়াও জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চার লেন মহাসড়কে উন্নীত করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, উড়াল সড়ক ও মেট্রোরেলের কাজ সম্পন্ন হলে দেশের যোগাযোগের চেহারা পাল্টে যাবে।
আইসিটি খাতে রপ্তানি আয় আট হাজার কোটি টাকা:
২০১৯ সালে আইসিটি খাতে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা টাকার হিসেবে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা।
শিক্ষাখাতে যুগান্তকারী উন্নয়ন:
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষাখাতে উন্নয়ন ছাড়া একটি জাতির টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না। ২০১৯ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার এখন ১৮.৬ শতাংশ। এর ফলে শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ পর্যন্ত ২৯৬ কোটি পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে সরকার।
কমছে দারিদ্র্যের হার:
২০১৮-১৯ অর্থবছরে দারিদ্রের হার কমে সাড়ে ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে অতি দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে সাড়ে ১০ শতাংশে।
৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে রপ্তানি আয়:
বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানি আয় ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই আয় আগের অর্থবছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্স আয় ১৬০০ কোটি ডলার:
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত দেশে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স ১৬শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।
খাদ্য উৎপাদনে বিস্ময়:
খাদ্য উৎপাদনে নীরব বিপ্লব বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে উন্নীত করেছে। ২০১৯ সালে দেশের খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ ৪ কোটি মেট্রিক টন
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি:
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে এবং মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার।
প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে রেকর্ড:
২০১৯ সালে বিশ্বের সব দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৮.১৫%।
অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মসংস্থান ১ কোটি মানুষের:
২০১৯ সালে চলমান বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলো সম্পন্ন হলে কর্মসংস্থান হবে ১ কোটি লোকের।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ:
২০১৯ সালে এসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে তুলনায় বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৯ গুণ বেড়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক:
স্বাস্থ্য সেবাকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার সারাদেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। যেখানে ৩০ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিমানে যুক্ত হয়েছে নতুন বোয়িং:
বাংলাদেশ বিমানে যুক্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘অচিন পাখি’ এবং ‘সোনার তরী’ নামে দুটি যাত্রীবাহী বিমান।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ২০১৯ সালের এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ২০২০ সালেও বজায় থাকবে, এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।