ডেস্ক নিউজ
রবিবারের ভোরটা যেন ঠিক অন্যরকম হয়ে ধরা দিল দেশবাসীর কাছে। প্রায় দেড় বছর যে দৃশ্য না দেখতে দেখতে প্রায় অচেনা রূপ পেয়েছিল তা আচমকাই সামনে দেখে কিছুটা দ্বিধায় পড়তে হয়েছে অনেককেই। ২০২০ সালের মার্চের পর এ দৃশ্য যে আর কেউ দেখেনি। নীল-সাদা, বেগুনি-সাদা, সবুজ-সাদা, মেরুন-সাদা, লাল-কালো, সবুজ-কালো রঙের স্কুল-কলেজের ইউনিফর্মে রাঙা সকাল এ যে। মহামারী করোনার সংক্রমণ এড়াতে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিনটির সকাল ছিল অন্যরকম রঙিন। রাজধানীসহ দেশের সব এলাকায় রবিবারের ভোরটা ছিল স্কুল-কলেজের ইউনিফর্মের রঙে রাঙানো। সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতায় আবারও প্রাণ ফিরেছে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে। দীর্ঘদিন পর নিজ শিক্ষাঙ্গনে তাই ফুল-বেলুনে এদিন বরণ করা হলো শিক্ষার্থীদের। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে এবার থেকে আবারও নিয়মিত জীবন-যাপনে ফিরবে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ বন্ধের পর প্রিয় ক্যাম্পাসে আসতে পারার খুশিটা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই চিরচেনা স্কুল ড্রেস, কাঁধে বইয়ের ব্যাগের সঙ্গে এবার নতুন পরিধান যোগ হয়েছে মাস্ক। তবে দীর্ঘদিন পর স্কুল খুললেও সহপাঠীদের সঙ্গে আগের সেই হইহুল্লোড় নেই। সামনের বেঞ্চ ধরা নিয়ে নেই হুড়োহুড়িও। শিক্ষকদের নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীরা দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ করছে প্রিয় অঙ্গনে। ১৮ মাস বা ৫৪৪ দিন পর রাজধানীর করাতিটোলায় পিঠে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে, মাথার চুলে দুই বেনুনি করে সাদা রঙের ইউনিফর্মে সিএমএস মেমোরিয়াল হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী হাইশা হুমাইশা যাচ্ছিল স্কুলে। দীর্ঘদিন পর স্কুলে ফেরার উচ্ছ্বাসে কতদিন পর স্কুলে যাচ্ছে সেই হিসাব দিয়ে বলল, কি যে একটা দমবন্ধ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল জীবনটা। কোন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা নেই, শিক্ষকদের সংস্পর্শ নেই। পড়ালেখা তো অনলাইনে হচ্ছিল। কিন্তু মনে কোন আনন্দ পাচ্ছিলাম না। আজ এতদিন পর স্কুলে যেতে পেরে কি যে ভাল লাগল। তার পিছু পিছু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা মিলল প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্যরা গেটে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মাপছে যন্ত্র দিয়ে। কারও হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের জার। কেউ বা আবার মুখে মাস্ক না থাকলে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এই বিষয়টি হুমাইশাকে আরও স্বস্তি দিয়েছে জানিয়ে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় একটা আতঙ্ক কাজ করছিল। কিন্তু এখানে স্বাস্থ্যবিধি মানতে যে সুন্দর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে আর ভয়ের কিছু দেখছি না। স্বাস্থ্যবিধি মানতে একই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে রাজধানীর খিলগাঁও মডেল কলেজেও। সারি বেঁধে স্কাউটের সদস্যরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মাপাসহ প্রবেশ পথেই স্যানিটাইজ ব্যবহার করাচ্ছে। কারও কারও মুখে মাস্ক না থাকলে সরবরাহ করছে মাস্কও। কলেজের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ই এটি করা হচ্ছে জানিয়ে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষিকা প্রিয়াশা ইম্পল শর্মা বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দী জীবন কাটিয়েছে সংক্রমণের ভয়ে। এখন যদিও স্কুল-কলেজ খুলেছে। কিন্তু আতঙ্ক রয়েই গেছে। আমরা চাই না একটা শিশুও কোন ধরনের ঝুঁকিতে পড়ুক। তাই এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে রাজধানীর অন্যান্য স্কুল-কলেজগুলোতেও। সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর মগবাজারের ইস্পাহানী স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক স্কুল এ্যান্ড কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গালর্স স্কুল এ্যান্ড কলেজ, পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারী কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারী কলেজ, ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, গবর্নমেন্ট মুসলিম হাইস্কুল, বাংলাবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট গ্রেগরিজ ও সেন্ট ফ্রান্সিসের মতো, মোহাম্মদপুরের আগারগাঁও তালতলা গভ. কলোনী হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজ, আল হেরা কলেজ, কিশালয় উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি বয়েজ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, শের-ই-বাংলা নগর গভ. গার্লস হাইস্কুল, মিরপুরের আদর্শ হাইস্কুল, আল নয়ন হাইস্কুল, আলহাজ আব্বাস উদ্দিন হাইস্কুল, আলিম উদ্দিন হাইস্কুল, বিসিআইসি কলেজ, বিএডিসি হাইস্কুল, বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতনসহ প্রায় প্রত্যেকটি স্কুল-কলেজে নেয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিশেষ ব্যবস্থা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগেই এসব প্রতিষ্ঠানে চালানো হয়েছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয় ফুল বেলুন দিয়ে। উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করেছে। সব স্কুল-কলেজই নতুনভাবে সেজেছে। শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস।
প্রথম দিন ক্লাসের চাপ না থাকায় খুশির হাসি আরও চওড়া হয় গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নবনীতা পূজার। দীর্ঘদিন পরে প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেই খুশি নবনীতা বলেন, শিক্ষকরা বলেছে কাল থেকে পুরোদমে ক্লাস চলবে। তাই আজ রিলাক্স। এতদিন পর সবাইকে দেখতে পেরে কি যে ভাল লাগছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও খোলায় শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তবে একই সঙ্গে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ার শঙ্কায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে। রাজধানীর এস ও এস হ্যারম্যান মেইনার কলেজের শিক্ষার্থী অহনা আনজুমের মা শাহনাজ শারমিন বলেন, অবশেষে মহামারী পেরিয়ে সকালের সূর্যটা যেন হেসে উঠল আজ। ঘরে ঘরে কি অসম্ভব প্রস্তুতি ভোর থেকে স্কুল-কলেজে যাওয়ার। আমার মেয়ের কলেজ জীবনের প্রথম বর্ষ কেটেছে অনলাইনে। আমার মুখে শোনা কলেজের নানা গল্প তাকে এতদিন হতাশ করছিল না পাওয়ার কষ্টে। শুভ হোক আর অনেক আনন্দে ভরে উঠুক কলেজের করিডরের আড্ডার দিনগুলো। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। আমাদের একটি সন্তানও যেন ঝুঁকিতে না থাকে সেটার দায়িত্ব আমাদের সবার।
তবে কিছু কিছু স্কুল-কলেজের সামনে দেখা গেছে অভিভাবকদের জটলা। যা স্বাস্থ্যবিধি হুমকি বাড়াতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডাঃ নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর আজ (গতকাল) দেশের স্কুল-কলেজ খুলেছে। আর তাতে প্রাণ ফিরেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মাঝে। তবে স্কুলের সামনে অভিভাবকরা জটলা করেছেন। আর এই জটলা দেশের করোনা সংক্রমণের বর্তমানের নিম্নমুখিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই অভিভাবকদের দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংক্রমণের এই নিম্নমুখিতায় স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে। সেখানে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। একে-অপরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই সংক্রমণের আগের চেহারা ফিরে না আসে।
এদিকে জনকণ্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যে জানা যায়, দীর্ঘ ১৮ মাস পর ক্লাস শুরুর আগে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের বেলুন-ফুলে বরণ করে নিয়েছেন শিক্ষকেরা। দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো গত বছরের মার্চে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘণ্টা বাজিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ক্লাস শুরু করেন আবার। ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লাস শুরু হয়ে যায়। সকাল ৮টার আগে থেকেই স্কুলে আসেন শিক্ষার্থীরা। স্কুলমুখী অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে মাস্ক। অভিভাবকরা সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফটক পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছেন। আর ফটকে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষকরা। তবে যেসব শিক্ষার্থী মাস্ক না পরে স্কুলে এসেছেন, তাদের শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন। পুরান ঢাকার স্কুল-কলেজগুলোতে ডেঙ্গু-সচেতনতা ও প্রতিরোধেও দেয়া হয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। মশা মারার এ্যারোসল এই এলাকার প্রায় সব স্কুলের শ্রেণীকক্ষে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর গত আগস্টের এক জরিপে জানায়, পুরান ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ অপেক্ষাকৃত বেশি। রবিবার পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে সেই ডেঙ্গু রোধে সচেতনতামূলক নানা কাজ দেখা গেছে। এই থানায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮টি, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ৯৬টি, সরকারী হাইস্কুল ১৫টি ও শিশুকল্যাণ স্কুল রয়েছে ৩টি। সকালে সূত্রাপুর থানার বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন সূত্রাপুর থানার সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, সূত্রাপুর থানার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে। প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে ওইদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ দ্রুত কমে যাচ্ছে। জুলাই মাসের তুলনায় সংক্রমণ ৭০ শতাংশ কমেছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। তিনি জানান, প্রথম দিন চার-পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে এ ক্লাসের সংখ্যা আরও বাড়বে। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। তিনি বলেন, শুরুর দিকে ২০২১ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তাদের প্রতিদিন স্কুলে আসতে হবে। এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে। স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করাতে হবে। স্কুলে আপাতত কোন এ্যাসেম্বলি হবে না। তবে ফিজিক্যাল এ্যাক্টিভিটি বা খেলাধুলা চলবে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভাল অবস্থানে থাকতে পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে চেকলিস্ট পূরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। র্যান্ডম স্যাম্পলিং করে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হতে পারে।
পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে আলাদাভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশ কিছু সতর্কতা ও সচেতনতামূলক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও ডিপিই থেকে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য মৌলিক ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হলেও মাউশি থেকে একটি গাইডলাইন দিয়ে সেই মোতাবেক স্কুল-কলেজে ক্লাস রুটিন তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। কয়েক দফায় স্কুল-কলেজ খোলার উদ্যোগ নেয়া হলেও পরিস্থিতি অনুকূলে না আসায় দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে আসছিল সরকার। শনিবার স্কুল-কলেজের এ ছুটি শেষ হয়।
অধিক মূল্যে থার্মোমিটার বিক্রি ॥ সিলেট অফিস জানায়, প্রায় দেড় বছর পর রবিবার থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠানে আজ ছিল প্রাণের উচ্ছ্বাস। বহুদিন পর শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলগুলোকে পাঠদানের নির্দেশ দেয়ায় প্রতিটি স্কুলকে নিতে হয়েছে সেরকম ব্যবস্থা। শনিবার ও রবিবার নগরীর ফার্মেসিগুলোতে থার্মোমিটার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। দিন শেষে অনেক ফার্মেসিতে থার্মোমিটার কিনতে পাওয়া যায়নি। এই সুযোগে অনেক প্রতিষ্ঠানকে অধিক মূল্যে থার্মোমিটার বিক্রি করতে দেখা গেছে। নগরীর শিক্ষা উপকরণ বিক্রির প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছিল অধিকহারে কেনা-বেচা। স্কুল থেকে দীর্ঘদিন পর প্রয়োজন দেখা দেয়ায় খাতা, মার্কার, ডাস্টার, কলমসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের জন্য ছুটে যান দোকানে। এদিকে বিশেষভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্লাসরুমের ফ্যাান নিয়ে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অধিকাংশ ফ্যান অচল হয়ে পড়েছে।