ডেস্ক নিউজ
বকেয়া ঋণের ১৫ শতাংশ জমা দিয়ে নিয়মিত রাখার সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুযোগের মেয়াদ কাগজে-কলমে শেষ হলেও আবারও সময় বাড়ছে। নতুন বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই অর্থ জমা নেওয়া যাবে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) ব্যাংকগুলোকে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি)। একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথমে ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ করে খেলাপি না থাকার সুযোগ ছিল। তবে গত ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আগের নির্দেশনা পরিবর্তন করে। ঋণের ১৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপি না থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু চারদিন পরই আবার সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ব্যাংকাররা বলছেন, অনেক গ্রাহক আশা করেছিল ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপি না থাকার সুযোগের সময় বৃদ্ধি করা হবে। তাই ঋণের এক-চতুর্থাংশ টাকাও পরিশোধ করেনি অনেকে। এ সুযোগে তারা কিস্তি শোধ করতে পারবেন। পাশাপাশি খেলাপি ঋণও কমে আসবে।
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংকখাতে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য গভর্নর বরাবর আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআিই।
সেই চিঠিতে বলা হয়, করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা বর্তমানে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে সময় পার করছেন। তাই ২৫ শতাংশ পরিশোধের শর্ত শিথিল করে ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের সে দাবিতে সায় দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
করোনাকালীন অর্থনীতির সংকট মোকাবিলায় ২০২০ সালজুড়ে ঋণের কিস্তির এক টাকা শোধ না করলেও গ্রাহককে খেলাপি করতে পারেনি ব্যাংক। চলতি বছর শুরু হয় ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ নিয়ে। এ বছর নতুন করে আগের মতো সব সুযোগ দেওয়া হয়নি। একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে তার ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলেও তাকে আর খেলাপি করা যাবে না। তবুও খেলাপি ঋণ বেড়েছে।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকখাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকায়। বর্তমানে তা এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সবশেষ ব্যাংকখাতের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৮.১২ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা।