বুধবার (৭ অক্টোবর) ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিনের দিনটা একটু অন্য রকম ছিল। আর দশটা দিনের মতো এতটা কর্মব্যস্ত সময় কাটাতে হয়নি তাকে। কারণ, এদিন তার বদলে প্রধানমন্ত্রীর মূল দায়িত্বগুলো পালন করেছে আরেকজন। তবে সেই আরেকজন তার কোনো সহযোগী বা সহকর্মী নন, বিশেষ কোনো ব্যক্তিও নন। দক্ষিণ ফিনল্যান্ডের ১৬ বছর বয়সী কিশোরী আভা মুর্তো এদিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছে।
শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের’ ‘গার্লস টেক-অভার’ নামের মেয়ে শিশুদের অধিকারবিষয়ক প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আভাকে এক দিনের জন্য ওই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেয়ে শিশুদের ডিজিটাল দক্ষতা দিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি এবং নারীর প্রতি অনলাইন সহিংসতা তুলে ধরতে এই প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কার্যক্রম গত রোববার পালিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। এর অংশ হিসেবে কেনিয়া, পেরু, সুদান আর ভিয়েতনামে মেয়ে শিশুদের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এল সালভাদর, গুয়াতেমালা, নেদারল্যান্ডস ও ফিলিপিন্সসহ বিভিন্ন দেশে মাইক্রোসফট, স্যামসাং, ফেসবুক ও টুইটারের জ্যেষ্ঠ পদগুলোতে কিশোরীদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত আভা। বিচার বিভাগের চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করার পর পার্লামেন্টের বাইরে গণমাধ্যমকে সে জানিয়েছে, তার দিন খুবই ভালো কেটেছে। আইনবিষয়ক বেশ কিছু নতুন তথ্যও জেনেছে সে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীনদের প্রতি তার বার্তা হচ্ছে, মেয়েশিশুদের বুঝতে হবে তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি ব্যবহারে তারা যে ছেলেশিশুদের মতোই ভালো তাও বুঝতে হবে। এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে বলেছে, ‘আমি মনে করি, ছোটরা বড়দের আরো বেশি উদ্ভাবনমূলক হতে এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি ভাবতে শেখাতে পারে।’
অন্যদিকে আভার ওপর দায়িত্ব থাকলেও গতকাল একেবারে কাজ ছাড়া দিন কাটাতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন। সকালের বাজেটবিষয়ক আলোচনায় অংশ নিতে হয়েছে তাকে। আভার সঙ্গে সকালের নাশতার পরিকল্পনা শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গেলেও সন্ধ্যায় দুজনের দেখা করার কথা।