ডেস্ক নিউজ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে কলকাতা প্রেস ক্লাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার’। আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর নামে ওই মিডিয়া সেন্টারের উদ্বোধন করবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। মিডিয়া সেন্টারের আয়োজক কলকাতা প্রেস ক্লাব।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই সব আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই মিডিয়া সেন্টারে থাকছে একটি গ্রন্থাগারও, যেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্পর্কিত মূল্যবান বই, যেগুলি গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তা করবে।
এ ব্যাপারে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর জানান ‘খুব শিগগির প্রেস ক্লাব কলকাতাতে বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র নামে একটি কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে। যেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা বসে কাজ করতে পারবেন এবং ভিডিও জার্নালিস্টরা তাদের ছবি সম্পাদনা করতে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার কলকাতা প্রেস ক্লাবকে এই মিডিয়া সেন্টারটি উপহার দিচ্ছে।’
এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতা প্রেস ক্লাব যে ভূমিকা রেখেছিল এবং কলকাতার গণমাধ্যমকর্মীরা যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন- সারা বিশ্বের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম ও সেখানে পাক বাহিনীর অত্যাচারের কথা তুলে ধরার স্বীকৃতি স্বরূপ হিসাবে এই সংবাদ কেন্দ্রটি দেওয়া হচ্ছে।’
স্নেহাশিষ সুরের অভিমত ‘অতিমারি কিংবা যেকোনো পরিস্থতিতে গণমাধ্যমকর্মীদের মুহূর্তের মধ্যেই তাদের সংবাদ পাঠাতে হয়। সেক্ষেত্রে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় বসে ভাবনা-চিন্তা করে, পুরনো তথ্য ঘেঁটে সেই সংবাদ পাঠানোর ক্ষেত্রে একটা জায়গা প্রয়োজন। সেই ভাবনা থেকেই কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রেস ক্লাব কলকাতায় নতুন এই মিডিয়া সেন্টার চালু হতে চলেছে- যাতে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকর্মীরা নিজেদের অফিসে না গিয়েও এই মিডিয়া সেন্টারে বসেই তাদের কাজ সেরে ফেলতে পারেন।
সেন্টারটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বিক উন্নয়ন সম্পর্কিত বই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যারা আগ্রহী- সেই সব গণমাধ্যমকর্মীদের কাজের ক্ষেত্রেও এ উদ্যোগ উপকারে আসবে।
মুক্তিযুদ্ধে প্রেস ক্লাবের অবদানের দিকটি তুলে ধরে প্রেস ক্লাব সভাপতি বলেন ‘আমরা সকলেই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টিতে সংবেদনশীল। এর আগে যে-সাংবাদিকরা মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করেছিলেন- কলকাতা প্রেস ক্লাব তাদের রচনাসম্বলিত একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন কলকাতার দুই প্রখ্যাত সাংবাদিক পেশার তাগিদে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন। যদিও তারা আর ফিরে আসেন নি। তাদের স্মরণেও কলকাতা প্রেস ক্লাবে শহিদ বেদী স্থাপিত হয়েছে।
অন্য দিকে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন জানান ‘বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে জন্ম শতবর্ষ উদযাপন চলছে, তারই অংশ হিসাবে কলকাতা প্রেস ক্লাবের তরফে সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার’ স্থাপনের ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এরপর সবদিক বিবেচনা করে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাতে অনুমোদন দেয়।
আগামী ২৮ অক্টোবর মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কলকাতায় আসবেন এবং ওইদিন তার হাত ধরেই কলকাতা প্রেস ক্লাবে এটি উদ্বোধন করা হবে।
সেন আরও বলেন ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কলকাতা প্রেস ক্লাব এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। তাই সেই প্রেস ক্লাবের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা রেখেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই ভারতের নয়াদিল্লিতে ‘প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া’য় বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার চালু হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ার দিকে দিল্লির রাইসিনা রোডে অবস্থিত ‘প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া’র দ্বিতীয় তলায় ওই মিডিয়া সেন্টারের উদ্বোধন করেন ড. হাছান মাহমুদ।