ডেস্ক নিউজ
‘সর্বশেষ যে স্টাডি, তাতে ৮৭ শতাংশ ছিল ডেল্টা এবং ১৩ শতাংশ ছিল ওমিক্রন। এখন হয়তো ওমিক্রন একটু বেড়ে মোর অর লেস ৮০/২০-এর দিকে আসছে। একটা মেজর পোর্শন কিন্তু আমাদের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সো ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ইজ অলওয়েজ ভেরি রিস্কি এবং আমাদের সে জন্য একটু খেয়াল রাখতে হবে। একটু কেয়ারফুল যদি না থাকি, তাহলে কিন্তু একটা ডিজাস্টার কিন্তু সামনে।’
এখনই সতর্ক না হলে করোনা পরিস্থিতি বিপর্যয় নিয়ে আসবে বলে সতর্ক করেছে সরকার। সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চললেও স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের নির্দেশনা মানতে জনগণের মধ্যে অনীহার কারণে এবার কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
পাঁচ দিন ধরে বিধিনিষেধে জীবনযাত্রায় দৃশ্যত কোনো পরিবর্তন না আসার প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আর দু-এক দিন দেখে সরকার অ্যাকশনে যাবে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘আগে দু-এক দিন অবজার্ভ (পর্যবেক্ষণ) করব, তারপর আমরা একটু অ্যাকশনে যাব। কারণ প্রথম থেকেই অ্যাকশনে যেতে চাই না। আমরা দেখতে চাচ্ছি ওনারা (জনগণ) মানেন কি না।’
সচিব বলেন, ‘অলরেডি আমরা প্রশাসনকে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ওয়াচ করতে বলেছি। তারপর ইনশাল্লাহ আমরা কাল-পরশুর মধ্যে কিছু একটা চেষ্টা করব।’
দেশে করোনার দুটি ঢেউয়ে মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর এবার দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয় ঢেউ। দেশে যে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে, সেই লক্ষণ স্পষ্ট। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে নীতিমালা, সেটি অনুসারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তে আসতে আর দু-এক দিন সময় লাগবে।
গত ৪ অক্টোবর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রথমবারের মতো তা ৫ শতাংশ ছাড়ায় গত ৭ জানুয়ারি। সেদিন থেকে টানা বাড়তে বাড়তে সংক্রমণের হার সোমবার দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর তিন দিন সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি হলেই তৃতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। কারণ নীতিমালা অনুযায়ী টানা দুই সপ্তাহ ৫-এর বেশি সংক্রমণের হার হলে করোনার ঢেউ ধরা হয়।
এই পরিস্থিতিতে সরকার গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ দেয়। তবে এগুলো পালন হচ্ছে না বললেই চলে। আবার এ নিয়ে সরকারের মধ্যেও সমন্বয়হীনতা আছে।
অফিস চলছে পূর্ণ লোকবল দিয়ে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চালু স্বাভাবিক নিয়মে। এর মধ্যে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী তোলার নির্দেশনা আসার পর ভোগান্তির বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরে জানানো হয়, বাসে প্রতি আসনেই যাত্রী উঠবে। তবে ট্রেনে আবার প্রতি দুই আসনে একজন যাত্রী তোলা হচ্ছে।
জানানো হয়েছে, সামাজিক বা রাজনৈতিক কোনো সমাবেশ করা যাবে না। এর মধ্যে ভোট হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও বেশ কয়েকটি পৌরসভায়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ষষ্ঠ ধাপের প্রচারও চলছে।
বাণিজ্য মেলাতেও প্রতিদিন ব্যাপক জনসমাগম হচ্ছে। করোনার টিকার সদন ছাড়া রেস্টুরেস্টে যাওয়া যাবে না- এই নির্দেশনা কাগুজে বাঘ হয়ে আছে। টিকা ছাড়া স্কুল নয়, এমন সিদ্ধান্তও রাখা যাচ্ছে না। কারণ সবাইকে টিকার আওতায় আনা যাচ্ছে না।
মাস্ক পরায় মানুষের মধ্যে যে অনীহা আগেও দেখা গেছে, সেখান থেকে কোনো উত্তরণ দেখা যায়নি। সরকার এ বিষয়ে কঠোর হবে ঘোষণা দিলেও প্রশাসনের তৎপরতাও কম। বাসে আসনপ্রতি যাত্রীর বদলে অফিস সময়ে উপচে পড়ছে যাত্রী।
এই অবস্থায় বিধিনিষেধে জনজীবনে আদৌ কোনো প্রভাব পড়েছে কি না, এ নিয়ে কথা উঠেছে।
করোনার সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চললেও দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় মৃত্যু এবার কম। আর এখন ছড়াচ্ছে ওমিক্রন নামে নতুন একটি ধরন, যার প্রভাবে সারা বিশ্বেই মৃত্যু কম। তবে এখনও দেশে করোনার প্রধান ধরন প্রাণঘাতী ডেল্টা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের একটা ভুল ধারণা আছে। আমরা ওমিক্রনকে (করোনার নতুন ধরন) সে রকম বিপজ্জনক মনে করছি না। আমাদের কিন্তু কম বেশি ৮০ শতাংশ কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়েন্ট।
‘সর্বশেষ যে স্টাডি, তাতে ৮৭ শতাংশ ছিল ডেল্টা এবং ১৩ শতাংশ ছিল ওমিক্রন। এখন হয়তো ওমিক্রন একটু বেড়ে মোর অর লেস ৮০/২০-এর দিকে আসছে। একটা মেজর পোর্শন কিন্তু আমাদের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সো ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ইজ অলওয়েজ ভেরি রিস্কি এবং আমাদের সে জন্য একটু খেয়াল রাখতে হবে।’
‘একটু কেয়ারফুল যদি না থাকি, তাহলে কিন্তু একটা ডিজাস্টার কিন্তু সামনে’-সতর্ক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সচিব বলেন, ‘দেখেন,অলরেডি ১৭ শতাংশের বেশি হয়ে গিয়েছে। আগের বার কিন্তু এক মাসেই ৩০ শতাংশ হয়েছে। এখন ১৫ দিনেই ১৮ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।
‘সুতরাং এটা কোনোভাবেই যদি আমরা কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেস, কমিউনিটি সেফটি মেজার যদি আমরা না কভার করি,মাস্ক না পড়লে কোনোভাবেই এটা ঠেকানো সম্ভব না। এটা মানুষকে বুঝতে হবে।’