করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে প্রায় ৬৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎসও বন্ধ। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে দু–এক মাসের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে।
আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ কিন্ডাগার্টেন স্কুল-কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আর্থিক প্রণোদনা, বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে এক মানববন্ধনে কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন শিক্ষকেরা। এসময় তারা এসব প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষকদের দাবি, বাংলাদেশের প্রায় সব কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হয়। সারা বাংলাদেশে এ রকম প্রতিষ্ঠান আছে ৬৫ হাজারের মতো। এতে প্রায় ১২ লাখ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োজিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণভাবে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টিউশন ফি দ্বারা পরিচালিত হয়। করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৬ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়ে। আয়ের উৎসও বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে আজ পর্যন্ত আট মাসের বাড়িভাড়া দেওয়াও সম্ভব হয়নি। এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাড়িওয়ালারা ভাড়ার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দু-এক মাসের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং লাখো শিক্ষক, কর্মচারী ও পরিচালক বেকার হয়ে যাবেন। ইতিমধ্যে অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে।
মানববন্ধনে শিক্ষকদের পক্ষে জাতীয় কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ সভাপতি আহসান সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- করোনা পরিস্থিতির দুর্যোগকালে কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের উদ্যোক্তা ঘোষণার মাধ্যমে আর্থিক প্রণোদনা/সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা; ২০২১ সালের ভর্তির সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান এবং বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া।
শিক্ষকনেতা মান্নান মনিরের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ কিন্ডাগার্টেন স্কুল-কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পরিচালক, সংগঠক ও সংস্কৃতিকর্মী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন। পরে সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বর্তমানে শিক্ষকদের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।