নিউজ ডেস্ক:
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি বছরে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের প্রত্যাশা নিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (স্পেশাল ইকোনমিক জোন) প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার জন্য এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি বরাদ্দ দেওয়া শুরু করেছে। এ অঞ্চলগুলো এখন বাস্তব রূপ পাচ্ছে।
মংলা ও মিরসরাই অঞ্চলের প্রথম পর্যায়ে ডেভেলপমেন্ট নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং কক্সবাজারের নাফ ট্যুরিজম পার্ক ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের ২১২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১ দশমিক ৫বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া মীরসরাই ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের জন্য প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বেজা। দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বেজার এ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করছেন। তবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলমান রাখা এবং সঠিক সময়ে উৎপাদন শুরু করার বিষয়ে তারা জোর দিয়েছেন।
বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে ১কোটি লোকের কর্মসংস্থানের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। যেখান থেকে আগামী ১৫ বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার রফাতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান চূড়ান্ত হয়েছে। সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে ২৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলমান রয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও পরিকল্পিত শিল্পায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে তা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক। এখান থেকে দেশ বড় ধরনের বেনিফিট পাবে যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে। তবে এসব অঞ্চলে সার্বক্ষণিক গ্যাস, বিদ্যুৎ-এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৫০ বছরের চুক্তিতে সর্বনিম্ন তিন একর করে জমি বরাদ্দ পাবেন একজন বিনিয়োগকারী। ইজারার মূল্য এককালীন অথবা বছরে বছরে পরিশোধ করতে পারবেন তারা। আর বছরে বছরে পরিশোধের ক্ষেত্রে মূল্য বেশি পড়বে। তবে বেজা এককালীন মূল্য পরিশোধে আগ্রহীদের অগ্রাধিকার দেবে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বড় শিল্প, বিশেষায়িত শিল্প, রপ্তানিমুখী ও আমদানি বিকল্প শিল্প স্থাপনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ জন্য বেজার কাছ থেকে ১২৫ ডলার বা ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ফরম কিনে তা পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ বেজার কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। বিনিয়োগ করলে ধাপে ধাপে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধার পাশাপাশি নানা ধরনের করের সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।