কোভিড টিকা তৈরি হয়েই গিয়েছে ভেবে তা নিয়ে নিজেদের দেশে পরীক্ষানিরীক্ষা ও উৎপাদনের জন্য যেন এখনই বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে অনুমোদনের আগাম আবেদন না জানিয়ে বসে ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। কারণ, যে সংস্থাগুলির বানানো কোভিড টিকা সবচেয়ে আগে বাজারে আসার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে, সেগুলি এখনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় পুরোপুরি পাশ করতে পারেনি।এই মর্মে আগামী সপ্তাহের গোড়ার দিকেই একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়ার কথা ভাবছে ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ও মডার্নার মতো কোভিড টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি।শুক্রবার,সংস্থাগুলির পদস্থ কর্তাদের সূত্রে পাওয়া এই খবর দিয়েছে মার্কিন দৈনিক ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
সংস্থাগুলির পদস্থ কর্তাদের বক্তব্য, তিন দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষানিরীক্ষায় পাশ করলেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে এই কোভিড টিকাগুলি একশো শতাংশ নিরাপদ ও কার্যকরী কি না। না হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে দেশে কোভিড টিকা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা ও সেগুলি উৎপাদনের যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, তা যাতে অবিবেচকের সিদ্ধান্তে পর্যবসিত না হয়, সে জন্য ওই যৌথ বিবৃতি দেওয়ার কথা ভেবেছে ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ও মডার্নার মতো কোভিড টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। সংস্থাগুলির বক্তব্য, বিভিন্ন দেশে কোভিড টিকা বানানোর প্রয়াসে যেন সর্বাধিক গুরুত্ব পায় বৈজ্ঞানিক সততা, নিষ্ঠা ও টিকার গুণমান বজায় রাখার জন্য একনিষ্ঠতা।
মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত লাগাতার প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোভিড টিকা বাজারে আনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। আগামী ৩ নভেম্বর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সেই ভোট বৈতরণী পেরতেই কোভিড টিকা তড়িঘড়ি বাজারে এনে ফেলতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ও মডার্নার মতো কোভিড টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির পদস্থ কর্তাদের বক্তব্য, এটা হলে মুশকিল। হিতে বিপরীত হতে পারে। ওই সব কোভিড টিকা পুরোপুরি নিরাপদ না-ও হতে পারে। যাঁদের সেই সব টিকা দেওয়া হবে তাঁরা নানা ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে পারেন।
সরকারি ভাবে হোয়াইট হাউস অবশ্য এই অভিযোগ স্বীকার করেনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেলেই ম্যাককানি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘বাজারে তড়িঘড়ি কোভিড টিকা নিয়ে আসার জন্য ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির উপর কোনও রাজনৈতিক চাপ দেওয়া হয়নি।’’
আপাতত যেটুক খবর, কোভিড টিকা সবচেয়ে আগে বাজারে আনার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে অ্যাস্ট্রোজেনেকা, ফাইজার ও মডার্নার মতো টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি।