ডেস্ক নিউজ
সাম্প্রতিক সময়ে ডলার সংকটে পড়েছে দেশ। এ সংকট কাটাতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। প্রায় প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার ছাড়া হচ্ছে। এতে রিজার্ভেও টান পড়েছে। রিজার্ভ এখন কমে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে এসেছে।
এদিকে খোলাবাজারে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। হু হু করে দাম বেড়ে যায় ডলারের। দাম বেড়ে হয়ে যায় ১১৮-১১৯ টাকায়। কারসাজিতে জড়িয়ে পড়ে অনেক এক্সচেঞ্জ হাউস। এতে সংকট আরও ঘনীভূত হয়, নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শুরু হয় অভিযান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিযানে দাম কমে আসে ডলারের। জরিমানা ও সিলগালা করে দেওয়া হয় অনেক এক্সচেঞ্জ হাউসকে। এতে কারসাজি কমে আসে। একদিকে ডলার কারসাজি কমে আসে অন্যদিকে ডলার সরবরাহ অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ডলার সরবরাহ অব্যাহত রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এমনটা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায়। আর ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১০৭ টাকা ২০ পয়সায় এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলার বিক্রি হচ্ছে। তবে আন্তঃব্যাংকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ডলার।
আন্তঃব্যাংক বলতে বোঝায়, এ দামে বিভিন্ন ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করে থাকে। আজ বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার (৭৬ মিলিয়ন ডলার) বিক্রি করেছে। আর বিভিন্ন ব্যাংক গ্রাহকের কাছে কেনাবেচা করছে ৯৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ৯৭ টাকার মধ্যে।
এদিকে ব্যাংকগুলো ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর জন্য ডলারের ক্রয়-বিক্রয় হারের মধ্যে ১ টাকার ব্যবধান বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে সর্বোচ্চ ১ টাকা বেশি দামে ওই ডলার গ্রাহকে কাছে বিক্রি করতে পারবে।
বাংলাদেশ মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. হেলার উদ্দিন জাগোনিউজকে বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনেই ব্যবসা করছি। অনেকের কাছ থেকে শুনছি ডলার বিক্রি নিয়ে কারসাজি হয়েছে। তবে এতে আমরা যারা সত্যিকার ব্যবসায়ী তাদেরকে ইমেজ সংকটে পড়তে হয়েছে।কোন দালাল চক্রের সাতে কোন ব্যবসায়ী জড়িত না। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের বেধে দেওয়া দরে ডলার বিক্রি করছি। আজ ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১০৭ টাকা ২০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, অবৈধভাবে ডলার বিক্রি বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিযান জোরদার করেছে। পাঁচ ব্যাংকের টেজারি প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক্সচেঞ্জ হাউজে আমাদের টিম নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। কোনো ধরনের অনিয়ম পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে টীম ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে, একাধিক অফিস সিলগালা করেছে। এতে বাজারের অস্থিরতাভাব কেটেছে অনেকটা। তদারকি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।