ডেস্ক নিউজ
টানা ১৩ বছর ধরে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে আজকের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল বলেই আজ আপনারা গত ১৩ বছরে পরিবর্তিত বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছেন।’
শুক্রবার (১১ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) তার সরকারি সফর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী আবুধাবিতে তার আবাসস্থল থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আর তিনটি আলাদা ভেন্যু দুবাইতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট, আবুধাবি থিয়েটার এবং রাস আল খাইমায় বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর একটি কালো অধ্যায় ছিল, কিন্তু কালো মেঘ চলে গেছে। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
কোভিডকালে ‘একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল‘ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এখন আরেকটি নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সুতরাং আমরা আরেকটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জ্বালানির দাম বাড়ছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আমরাও কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। তবে, আমি বিশ্বাস করি যে আমরা বাংলাদেশে এটি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।’
এসময় দেশে যেন কোনও জমি অনাবাদি রাখা না হয় তা নিশ্চিত করতে প্রবাসীদেরও তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি তা (ফসল ফলানো) করতে পারি, তাহলে বিশ্বজুড়ে যতই অর্থনৈতিক মন্দা এবং খাদ্য ঘাটতি থাকুক না কেন, আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না।’
তিনটি আলাদা ভেন্যু থেকে যুক্ত হন বাংলাদেশি প্রবাসীরা
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ ইচ্ছা না করলে দেশে বেকার থাকার সুযোগ নেই। কেউ একটু উদ্যোগ নিলে আর বেকার থাকবে না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি আমার সফর খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে’।
দেশ থেকে চাকরি প্রত্যাশীরা যেন কখনোই অবৈধ পথে বিদেশে না যান এবং বাড়ি-জমি বিক্রি না করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যান— এমন আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে প্রবাসীদের বিদেশের মাটিতে নিয়ম-কানুন মেনে চলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনাকে নিজের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং নিজ দেশ এবং যেদেশে আপনি আছেন উভয় দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।’
প্রবাসীদের দাবির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সরকার তাদের জন্য দ্রুত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে এবং বিমানবন্দরে আরও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে প্রবাসীদের হয়রানি কমাতে নজরদারি জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট অবতরণ করলে বিমানবন্দরে লাগেজ ডেলিভারি সেবা নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা যায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল তার সরকার নির্মাণ করছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে লাগেজ সমস্যা কেটে যাবে।
অনুষ্ঠান চলাকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রমুখ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এক কলেজ ছাত্রীসহ তিন প্রবাসী বক্তব্য দেন। খবর বাসস।