ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পোলট্রি শিল্প। মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ভয়াবহ বিপর্যয় নামে এই খাতে। তবে এখন সে পরিস্থিতি কেটে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিপিআইসিসি বলছে, করোনায় সৃষ্ট সংকটের ৮০ শতাংশই কেটে গেছে। দিন দিন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। পোলট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) এক হিসাব থেকে জানা গেছে, করোনায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়। পোলট্রি খাতে প্রচুর ব্রয়লার খামার সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিনিয়োগ হওয়া ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল গচ্চা যায়। চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় ডিম পাড়া মুরগিও অনেক খামারি বিক্রি করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিপিআইসিসির সাধারণ সম্পাদক ড. এম আলী ইমাম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনায় সৃষ্ট সংকটের ৮০ শতাংশ কেটে গেছে। দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। তবে পোলট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৪০ শতাংশ নারী শ্রমিক করোনার কারণে যথাযথভাবে কাজ করতে পারছেন না। ফলে প্রত্যাশিত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিপিআইসিসির তথ্য অনুযায়ী, করোনার আগে ডিমের দৈনিক উৎপাদন ছিল প্রায় ৪ কোটি ৮৯ লাখ। গত মার্চ-এপ্রিলে তা ৩ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজারে নেমে আসে। তবে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৭১ লাখ ৬ হাজার ডিমের উৎপাদন হচ্ছে।
হ্যাচিং ডিম বাজারে চলে আসায় শুরুতে ঘাটতি চোখে পড়েনি। সাম্প্রতিক সময়ে এক দিন বয়সী বাচ্চার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিডার ফার্মগুলো বাচ্চার উৎপাদন বাড়িয়েছে। ফলে খাবার ডিমের বাজারে চাহিদার বিপরীতে উৎপাদনে কিছুটা টান পড়েছে। ব্রয়লার মুরগির মাংসের দৈনিক উৎপাদন ৩ হাজার ৪৪০ টন থেকে গত মার্চ-এপ্রিলে প্রায় ১ হাজার ৮৯২ টনে নেমে আসে। তবে জুন-জুলাই মাসে উৎপাদন বেড়ে ২ হাজার ৫৮০ টন হয়েছে। আর এক দিন বয়সী বাচ্চার স্বাভাবিক উৎপাদন করোনার আগে ছিল ১ কোটি ৭২ লাখ। গত মার্চ-এপ্রিলে সাপ্তাহিক উৎপাদন ৯৪ লাখ ৬ হাজারে নেমে আসে। যা গত জুন-জুলাই মাসে বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ ১ হাজার।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মনজুর মোরশেদ খান বলেন, করোনায় সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পোলট্রি শিল্প। ডিমের বাজার আগের তুলনায় বেশ ভালো। সোনালি মুরগির দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তবে ব্রয়লার খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখনো। ব্রয়লারের দাম অনেক কমে গেছে।