নিউজ ডেস্ক:
দলের ভঙ্গুর অবস্থা বিবেচনায় বিএনপিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনায় তোলপাড় চলছে বিএনপিতে। নেতারা বলছেন, বিএনপিকে নতুন করে ঘুরে দাঁড় করতে বিএনপিতে যে সংযোজন-বিয়োজন চলছে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পদে সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের অসহায়ত্বের দিনগুলো পেছনে ফেলে বিএনপি প্রাণশক্তি ফিরে পেতে চায়- এমন আলোচনাতেও তৈরি হয়েছে মত ভিন্নতা। দলের সংযোজন-বিয়োজনকে কেন্দ্র করে সিন্ডিকেটের বিপক্ষের একটি অংশ বলছে, সংযোজন-বিয়োজনের কথা বলে দলের অভ্যন্তরে একটি চক্র বিএনপিকে আজ্ঞাবহ দলে পরিণত করার চেষ্টা করছে। যা শুভ ফলাফল বয়ে আনবে না।
তারা এও বলছেন যে, যেখানে বিএনপির পুনর্জাগরণে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে শীর্ষ নেতৃত্বদের পরিবর্তন, সেখানে বিএনপির অঙ্গসংগঠন নিয়ে মেতে আছে বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা। সিন্ডিকেট তৈরি করে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতেই তাদের এই বৃথা তৎপরতা।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, উচিত কথা প্রকাশ্যেই বলতে হয়, কিন্তু সেটা আমরা পারি না। বিএনপি একটি সিন্ডিকেট বা চক্রের মাধ্যমে চলছে। সেই চক্রটি চাইছে বিএনপিকে কুক্ষিগত করতে। যেটি বিএনপির রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত। সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে রিজভী চক্রের কৌশল অবলম্বন দেখলেই আমার বক্তব্যের সত্যতা পেতে পারেন।
সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি বাতিল করে দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর একটি কৌশল দলে ভিন্নমাত্রা এনেছে। ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল কমিটির সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানকে পদে আনতে তারেক রহমানকে পরামর্শ দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দিয়ে বয়স সীমা নির্ধারণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দিয়ে ছাত্রদলের আগামী কাউন্সিলে কেবল ২০০০ সাল-পরবর্তী যেকোন বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা বিষয়ক নিয়ম করিয়ে নিয়েছেন। কারণ, তাদের দুই প্রার্থীর মধ্যে মেহেদী (২০০০) ও হাফিজুর রহমান (২০০১) সালে এসএসসি পাস করেছেন। যদিও মেহেদী বিবাহিত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি নিয়েও দলে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন না করে সিন্ডিকেট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মনমতো নেতাদের। দলে তাদের ভূমিকা ইতিবাচক ছিলো কিনা তা দেখা হচ্ছে না বলেও সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে এই ইস্যুকে সামনে এনে বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর।
এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির রাজনীতি সিন্ডিকেটের গোলকধাঁধায় পড়ে নতুন করে অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।