ডেস্ক নিউজ
মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক-এ নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে এবং ল্যান্স করপোরাল রবিউল মোল্লা দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন।
শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যাওয়া দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজের কাছ থেকে বাংলাদেশের পক্ষে পদক গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
শান্তিরক্ষী মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্স করপোরাল মো. রবিউল মোল্লা এ পদক পান।
মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক-এ নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে এবং ল্যান্স করপোরাল রবিউল মোল্লা দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন।
নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে এ পদক পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন।
পদক প্রদান অনুষ্ঠানে রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘‘শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যেতে আমাদের সংকল্পকে শক্তিশালী করে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক প্রদান করা হয়।’’
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘জনগণ শান্তি অগ্রগতি: অংশীদারিত্বের শক্তি’।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী ৪২টি দেশের ১১৭ জন শান্তিরক্ষীকে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক প্রদান করা হয়।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ বাংলাদেশসহ ৪২টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে স্ব স্ব দেশের পদক তুলে দেন।
দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। শোক বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ব শান্তির জন্য পবিত্র দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ তার অনেক সাহসী সন্তানকে হারিয়েছে। শান্তিরক্ষায় জীবনদানকারী সকল বীর শান্তিরক্ষীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং অপূরণীয় এই ক্ষতির জন্য তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।’
কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সব শান্তিরক্ষীদের সম্মানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত ‘শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট’ এ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এ সময় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তারা ও জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কর্মরত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮০২ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের ৯টি মিশনে রয়েছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় এ পর্যন্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৬১ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর পর এবার আবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সশরীরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হলো।