ডেস্ক নিউজ
রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে নিবন্ধনহীন সাতটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড। দেশে গ্যাসের সবচেয়ে বড় বিতরণ কম্পানি তিতাসের অধীনে বর্তমানে সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে ৩৯৬টি। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নিবন্ধন ছাড়াই চলছে ৭০টিরও বেশি সিএনজি ফিলিং স্টেশন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিবন্ধনহীন সাতটি সিএনজি স্টেশন বন্ধ করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
তিতাস সূত্রে জানা যায়, তিতাসের পরিদর্শক টিম এবং সংশ্লিষ্ট জোনের কর্মকর্তাদের যৌথ উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিইআরসির লাইসেন্স না থাকায় রাজধানীর উত্তর বাড্ডার মক্কা সিএনজি স্টেশন, মধ্যবাড্ডার সিটিজেন সিএনজি স্টেশন, মেসার্স মাহতাব মটরস সিএনজি স্টেশন, মেটাবিবি-৬ জোনের আওতায় মেসার্স শতাব্দী সিএনজি স্টেশন ও মনি সিএনজি ইনলেট, মেটাবিবি-৫ জোনের আওতায় আরো দুটি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে তিতাস।
বিইআরসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে তিতাসের আওতায় বিইআরসি নিবন্ধন না নিয়েও সারা দেশে ৭০টিরও বেশি সিএনজি ফিলিং স্টেশন চলছে। অবৈধ এসব স্টেশনে সমঝোতার মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে আসছিলেন তিতাসের অসাধু কিছু কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিবন্ধনহীন সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ করতে আমরা জোরালোভাবে অভিযানে নেমেছি। আজ (গতকাল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি টিমের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সাতটি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছি। নিবন্ধনহীন সব সিএনজি স্টেশন বন্ধ করা হবে। ’ তিনি বলেন, ‘অভিযানে নামার ১০ দিন আগে তিতাসের পক্ষ থেকে সিএনজি স্টেশনগুলোতে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছি। তার পরও নিবন্ধন না নেওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ’
জানতে চাইলে বিইআরসির সদস্য (গ্যাস) মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী বিইআরসির নিবন্ধন ছাড়া সিএনজি স্টেশন পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই। নিবন্ধন ছাড়া পরিচালিত ৭০টিরও বেশি সিএনজি স্টেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে। এখন তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অভিযানে নেমেছে। ’
বিইআরসি সূত্র বলছে, নিবন্ধনহীন সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের ২০ জুন পর্যন্ত দফায় দফায় চিঠি দিয়েছে বিইআরসি। এর পরও এসব অবৈধ সিএনজি স্টেশনের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাস কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
বিইআরসির আইন ২০০৩-এর ধারা ২৭(১) অনুযায়ী, সিএনজি মজুতকরণ ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিইআরসি থেকে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। তা ছাড়া গ্যাস আইন ২০১০-এর ধারা ৮(১) অনুযায়ী কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন নিয়ে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের ব্যবসা শুরু করতে পারবে মর্মে নির্দেশনা রয়েছে। ফলে অনেক সিএনজি ব্যবসায়ী নিবন্ধন নিলেও এখন পর্যন্ত বেশ কিছু ব্যবসায়ী নিবন্ধন নেননি, যা বিইআরসি ও গ্যাস আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।