তরুণরা চাকরি পেয়ে যাতে দেশের ভেতরে থাকতে পারেন, সে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে আরো অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের ভেতরে তরুণরা যাতে চাকরি পেতে পারেন।
শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এনইসি সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন। পরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সার-সংক্ষেপ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন পরিকল্পনা কমিশন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আর ফসলি জমি যাতে নষ্ট না হয় (ধান পাট গমের জমি), এ জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মাস্টার প্ল্যান করা হবে। ল্যান্ড ইউজ প্ল্যান বা ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। অন্যান্য দেশে এই পরিকল্পনা আছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, ভূমিভিত্তিক পরিকল্পনা করা হোক সব ইউনিয়নের জন্য; যাতে এখানে-ওখানে ঘরবাড়ি না ওঠায়। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ নির্দেশনা। এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
বাসস জানায়, সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে বলেই দেশ উন্নয়নের ধারায় ফিরতে পেরেছে এবং জনগণ সুফল পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনতার ক্ষমতা জনতার হাতে আমরা ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের হাতেই আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি, যার ফলে আমাদের উন্নয়নের গতিধারা যথেষ্ট সচল হয়েছে। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২৫) প্রণয়নে অনুষ্ঠিত এনইসির সভায় তিনি ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যেমন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়েছি তেমনি ২০১০ সাল থেকে ২০ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। পরবর্তীতে তার সরকার ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত পৃথক প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ২০২১ থেকে ’৪১ এই সময়ের মধ্যে দেশকে কিভাবে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবো সে জন্য আরো কয়েকটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। যার মধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।
সরকার প্রধান আরো বলেন, আমরা সরকারে থাকি বা যারাই থাকুক তারা যদি এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে, বাংলাদেশকে আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস একটা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। সেটা শুধু আমাদের নয়, বিশ^ব্যাপী। জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে যান সেখান থেকে তার সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ^ যেখানে একেবারেই থমকে গেছে সেখানে বাংলাদেশ তার অর্থনীতির গতিধারা সীমিত আকারে হলেও চলমান রাখতে পেরেছে।