বিএনপির মধ্যে এখন টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন বানিজ্যের ঘটনা এখন কেলেংকারীতে রূপ নিয়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে পরেছেন বিএনপির অনেক হেভিওয়েট নেতা। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম আহবায়ক কফিল উদ্দিন আহমেদ প্রথমে মনোনয়নের জন্য আবেদন করতে চাননি। কফিল উদ্দিন রাজনীতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের শিষ্য হিসেবে পরিচিত। গয়েশ্বরের তদ্বিরেই তিনি দক্ষিনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। যদিও কফিল উদ্দিন থাকেন উত্তরায়। বিএনপি যখন উপ-নির্বাচনের অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন গয়েশ্বর ফোন করেন কফিল উদ্দিনকে। তাকে অবিলম্বে দেখা করতে বলেন। নেতার নির্দেশে কফিল উদ্দিন যান গয়েশ্বরের কাছে। তাকে জিজ্ঞেস করেন ‘উত্তরার আসনে কফিল আগ্রহী কিনা।’ কফিল উদ্দিন ইতিবাচক উত্তর দেন। কফিল উদ্দিন গয়েশ্বরকে এটাও বলেন যে, উত্তরায় আমার বাড়ী। আমার আত্মীয় স্বজন সবাই সেখানে থাকে।’ এসময় গয়েশ্বর বলেন ‘মনোনয়ন পেতে হলে টাকা খরচ করতে হবে। ‘ভাইয়া’ (তারেক) কে ম্যানেজ করতে হবে। দীর্ঘ দর কষাকষির পর রফা হয় এক কোটি টাকায়। একটি পাঁচতারা হোটেলে কফিল উদ্দিন, তিনটি চেকের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা দেন। কথা ছিলো, এই টাকা গুলো লন্ডনে পলাতক বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি তারেককে দেয়া হবে।
গয়েশ্বর জানান, তার হুন্ডির লোক আছে, তার মাধ্যমে এই টাকা লন্ডনে পৌছে যাবে। গয়েশ্বরকে টাকা দেয়ার পর কফিল উদ্দিন নিশ্চিত ছিলেন যে, তিনিই উত্তরার আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন। এজন্যই তিনি সাক্ষাৎকারের দিনে শো ডাউন করেন। এসময় বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়। মনোনয়ন বোর্ডের সভার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ফোন করেন কফিল উদ্দিনকে। দলের ফান্ডে ২০ লাখ টাকা দিতে বলেন। কিন্তু কফিল জানেন যে, তার মনোনয়ন কনফার্ম। ভাইয়া ৮০ লাখ টাকা পেয়েছে। বাকী ২০ লাখ টাকা মনোনয়নের পর তার নেতা গয়েশ্বরকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন কফিল। এজন্য, বিএনপি মহাসচিবকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বিএনপি যখন ঢাকা-১৮ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন, তখন যেন কফিল উদ্দিনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। এরপর খোঁজ খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন, তারেক জিয়াকে দেয়ার জন্য যে ৮০ লাখ টাকা তিনি গয়েশ্বরকে দিয়েছিলেন, তার পুরোটাই মেরে দিয়েছেন বিএনপির ঐ নেতা। তারেক এক পয়সাও না পেয়ে মনোনয়ন দেন জাহাঙ্গীরকে।