ডেস্ক নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ বিনির্মাণ করা আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশকে ২০২১ সালে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছি। দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে এসেছি এবং প্রতিটি গৃহ-ভূমিহীন মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি দিচ্ছি। সেদিন বেশি দূরে নয়, যখন গৃহহীন বা ভূমিহীন একজন মানুষও পাওয়া যাবে না।’ ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে বড় পরিসরে ই-লাইব্রেরি ভিত্তিক একটি পৃথক লাইব্রেরি স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সব দেশের মানুষ গবেষণার জন্য এই লাইব্রেরিতে দলিল ও তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর বিভিন্ন প্রকাশনী, বই, ফিল্ম, শর্ট ফিল্ম, ডকুমেন্টারিসহ সব দলিল সংরক্ষণের জন্য এগুলো ডিজিটাল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রতিটি উপজেলায় ছোট জাদুঘরসহ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কেউ যেন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধ্বংস করতে না পারে, সে লক্ষ্যেই মূলত এগুলো স্থাপন করা হয়েছে। সরকার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধির ইতিহাস পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সবকিছুই করে যাচ্ছে।
সভায় জাতীয় সংসদ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বেসামরিক ও সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
ইতিহাস জানার মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে চেতনা জাগ্রত হবে : এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) থাকা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) কার্যালয়ে স্থাপিত ‘মুজিব কর্নার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘ইতিহাস জানার মধ্যদিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের ভেতর একটা চেতনা জাগ্রত হবে, দেশপ্রেমে তারা উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানুষের কল্যাণে তারা আরও কাজ করতে অনুপ্রেরণা পাবে।
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই মানসিকতা যত বেশি ফিরে আসবে তত দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে এগিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখে। বিশ্বের অনেক দেশ এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে। বিদেশি অতিথিরা দেশে এলে তাদের নিরাপত্তায় থাকা এসএসএফ সদস্যদেরও ভূয়সী প্রশংসা করে থাকেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই কর্নারে ইতিহাসের অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কাজেই যারা দায়িত্ব পালন করতে আসবে তারা একদিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, আর বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলার প্রেরণা পাবে। কারণ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানে যেমন সমৃদ্ধশালী হতে হবে, তেমনি ইতিহাসের শিক্ষা থেকেই আমরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎটা আরও উজ্জ্বল করব, উন্নত করব। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জেল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবির আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।