ডেস্ক নিউজ
ভারতে আটকে পড়া ৬ বাংলাদেশিকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে তাদেরকে পরিবারের সদস্যেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভারত ফেরত ছয় বাংলাদেশি হলেন, বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলার জিয়ারুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের হানিফা আক্তার, ময়মমসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলপনা খাতুন, ঢাকার কেরানীগঞ্জের রীনা আক্তার, জামালপুরের মানিক মিয়া এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মোঃ শাহাজান মিয়া। তারা ২ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ভারতে আটকা ছিলেন। দীর্ঘদিন পর হারিয়ে যাওয়া স্বজনকে ফিরে পেয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন।
আজ দুপুর ১২টায় আখাউড়ার স্থবন্দরের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে তাদেরকে ভারত থেকে দেওয়ার সময় ভারতের বাংলাদেশের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জুবায়েদ হোসেন, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান এস এম আসাদুজ্জামান, প্রথম সচিব মো. রেজাউল হক উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থার ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান, ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ মো. আব্দুল হামিদ, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম ও ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
ভারত থেকে ফেরত আসা বগুড়ার গোবিন্দপুরের মো. জিয়ারুলের স্বজন (ভায়রা ভাই) মোহাম্মদ রাজ্জাক জানান, ২০১৪ সালে ভায়রা ভাই নিখোঁজ হয়ে যান। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন। এমন একজন মানুষ কীভাবে ভারতে চলে গেল সেটা তারা বুঝতে পারছেন না।
পরিবারের কাছে হস্তান্তরের পর ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে পাচারের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারবর্গের জরুরি অর্থ সহায়তা এবং কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা হয় বলে জানান বেসরকারি সংস্থার ব্র্যাক মাইগ্রশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান। এ সময় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, এখানে অনেকের বাড়ি ভারতে ত্রিপুরা সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। ধারণা করছি, এরা পাচারের শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছয় বাংলাদেশিই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হতে আটক হয়। পরে আদালতের নির্দেশে আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তারা কীভাবে ভারতে এসেছে এ ব্যপারে আমাদেরকে কিছুই বলতে পারেনি। এদের অনেকেই এই হাসপাতালে চার থেকে পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর তাদের দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি চিৎিসাধীন আছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’