ডেস্ক নিউজ
গত এক বছরে দেশে গরু-ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে ৩৮ হাজার ৯৬৬টি। এর মধ্যে গরু বেড়েছে ৩৪ হাজার ৫১টি এবং ছাগল বেড়েছে ৪ হাজার ৯১৫টি। গরু-ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন কোরবানি ঈদে দেশে পশুর কোনো সঙ্কট হবে না। সম্পূর্ণ দেশীয় উৎস থেকে কোরবানির পুরো চাহিদা মেটানোর পরও উদ্বৃত্ত থাকবে প্রায় ২০ হাজার পশু। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে করোনার মহামারি কারণে পশুর হাট থেকে কোরাবানির পশু বিক্রির চেয়ে এবার অনলাইনে পশু বেচাকেনায় বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। খামারিদের পশু যাতে অবিক্রীত না থাকে সে জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদফতরও এ বিষয়ে বেশ তৎপর। এ জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে ও খামারিপর্যায়ে অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে কোরবানি উপযোগী প্রাণী রয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। গরু ও মহিষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৪৭ হাজারটি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৯৪টি। মহিষ আছে ১ লাখ ৭২ হাজার ২০৬টি। ছাগল ও ভেড়া আছে ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ১টি। এর মধ্যে ছাগলের সংখ্যা ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬৮টি। আর ভেড়ার সংখ্যা ৯ লাখ ২৯ হাজার ৩৩টি। উট-দুম্বাসহ অন্যান্য পশু আছে ৪ হাজার ৭৬৫টি।
অধিদফতর সূত্রে আরও জানা যায়, গতবছর কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ২৭৮টি। মহিষের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭২২টি। গতবছর ছাগলের সংখ্যা ছিল ৬৪ লাখ ৩১ হাজার ৫৩টি। ভেড়ার সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ২৩ হাজার ৯৪৭টি। অন্যান্য পশু ছিল ৪ হাজার ৫০০টি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের চেয়ে এ বছর মোট পশুর সংখ্যা বেড়েছে ১৯ হাজার ২৬৫টি। এর মধ্যে গরু, ছাগল ও ভেড়া বাড়লেও কমেছে মহিষের সংখ্যা। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার গরুর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪ হাজার ৫১টি। ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৯১৫টি। আর ভেড়ার সংখ্যা বেড়েছে ৫ হাজার ৮৬টি। অন্যদিকে গত এক বছরে মহিষের সংখ্যা কমেছে ২৫ হাজার ৫১৬টি।
এদিকে গতবছর দেশে মোট পশু কোরবানি হয়েছিল ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। এ বছর কোরবানির চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯ লাখ পশু। তাই এবারের মোট পশুর ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টির চেয়ে চাহিদা কম থাকায় আসন্ন কোরবানির ঈদে সম্পূর্ণ দেশীয় উৎস থেকে কোরবানি দেওয়ার পরও উদ্বৃত্ত থাকবে ২০ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা সময়ের আলোকে বলেন, গতবছর করোনার প্রকোপের কারণে পশু কোরবানি তুলনামূলক কম হয়েছে। এবারও করোনার প্রাদুর্ভাব রয়েছে, তবু আমরা আশা করছি, এবার কোরবানি বেশি হতে পারে। তবে চাহিদা বাড়লেও দেশে কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট হবে না। বরং কোরবানি দেওয়ার পরও উদ্বৃত্ত থাকবে প্রায় ২০ লাখ পশু।
তিনি আরও বলেন, এবারও করোনার প্রকোপ রয়েছে এবং দেশে লকডাউন চলছে, সে কারণে খামারিরা যাতে তাদের পশুগুলো বিক্রি করতে পারেন সে জন্য অনলাইনে পশু বিক্রিতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।
বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেস থেকে শুরু করে খামারিরাও নিজ উদ্যোগে অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকেও এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতবছরও অনলাইন প্লাটফর্মে কোরবানির পশু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ উদ্যোগের ফলে গতবছর অনলাইনে অনেক পশু বিক্রি হয়।
এদিকে গতবছর অনলাইনে কোরবানির পশু কিনতে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছে চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষ। অবশ্য গরু কেনাতে চট্টগামের মানুষ এগিয়ে থাকলেও ছাগল বেশি কিনেছে ঢাকার মানুষ। গত বছর অনলাইনে মোট গরু বিক্রি হয় ১১ হাজার ১০৪টি এবং ছাগল বিক্রি ২ হাজার ২০৬টি, যার বিনিময়মূল্য ছিল ৬০০ কোটি টাকা।