নাটোর প্রতিনিধি
ঠিকাদারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকাবাসী সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকদের ভয় ভীতি দেখিয়ে এক মাস ধরে নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি সরকারী বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে রেখেছে ঠিকাদার সুজিত কুমার সরকার।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রায় এক মাস ধরেই এভাবেই ঠিকাদার তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা সহ এলাকার পরিবেশও সষ্ট করে চলেছে। এখন বিদ্যালয়ের দিকে তাকালে শুধু সড়ক নির্মান সামগ্রীই চোখে পড়ে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও বার বার শিক্ষকদের কাছে এব প্রতিকার চেয়েও হয়েছেন নিরাশ। শিক্ষকরাও বলছেন ঠিকাদার সুজিত কুমার সরকারকে মাঠ ফাঁকা করতে বলেও কোন কাজে আসেনি। তিনি কোন কথায় কর্ণপাত করছেন না। এজন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে ঠিকাদার সুজিত কুমার সরকারের সাথে কথা বলেও কোন লাভ হয়নি। বরং তিনি এলাকার মানুষকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিধ্যালয়ের মাঠ থেকে নির্মান সামগ্রী সড়িয়ে নিয়ে বিদ্যালয়ের পড়াশুনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে মনে করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসী।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, তারা মাঠে দীর্ঘদিন যাবত খেলাধুলা করতে পারছেনা। অনেক সময় স্কুলে আসার সময় ছাত্র ছাত্রীরা পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পায়। তাছাড়া মাঠের মধ্যে বসানো মেশিনের শব্দে তাদের ক্লাস করতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে শিক্ষকদের কোন পড়ায় তাদের কানে আসছে না। কথাগুলো তারা তাদের অভিভাবক সহ শিক্ষকদের অনেকবার বলেছে। কিন্তু কোন ভাবেই এখান থেকে এগুলো সড়ানো হচ্ছেনা। তাই তারা সরকারের কাছে দাবী করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে পড়াশুনার পরিবেশ নষ্ট করা এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যাবস্থা গ্রহন করার। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ শাহনেওয়াজ রিতা বলেন , ঠিকাদার তার বা বিদ্যালয় পরিচালনা কমির্টির কোন অনুমতি না নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে যখন ঠিকাদার তার কাজের নির্মান সামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে রাখা শুরু করে তখন তাদের বাঁধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন সুজিত ঠিকাদারের মাল বলে জোর করেই এগুলো মাঠে রাখা শুরু করে। পরে আসে আসে গোটা মাঠ তারা তাদের দখলে নিয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় শব্দ দূষন ও বায়ু দূষন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট দুই শতাধিক ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। এসকল ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় এবং শারিরিক সমস্য হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার সুজিত কুমার সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন লাভ হয়নি। ঠিকাদার তার কাজ ঠিক চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছেলে মেয়েদের ক্লাস নিতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। দ্রুত প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় মাঠ থেকে নির্মান সামগ্রী সড়িয়ে নিয়ে পড়াশুনার পরিবেশ তৈরী করে দেওয়া হবে। বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নিমান সামগ্রী রেখে পড়াশুনা সহ খেলাধুলার পতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়ে জানতে ঠিকাদার সুজিত কুমার সরকারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , কোন বিদ্যালয়ের মাঠে তিনি তার কোন নির্মাণ সামগ্রী রাখে নাই। আর যেহেতু নির্মাণ সামগ্রী রাখাই হয়নি তাহলে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনার সমস্য হবে কি করে। আপনার কাজের নির্মাণ সামগ্রী তাহলে কোথায় রেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন বিদ্যালয়ের পাশের একটি মন্দিরের সামনে রাখা হয়েছে। এতে করে যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হয় তাহলে তার কি করার আছে। সড়কের কাজ করার সময় সড়কের পাশের যেকোন ফাঁকা স্থানেই নির্মাণ সামগ্রী রেখে তারা কাজ করেন। আর এগুলো এখন সড়ানোর কােন প্রশ্নই আসেনা।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী রেখে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা সহ খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। কোন ভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে কোন ঠিকাদারকে কাজ করতে দেওয়া হবেনা। এ ব্যাপারে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তিনি স্পর্টে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করবেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।