নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় শুরু হয়েছে। প্রাত্যহিক জীবনের একঘেঁয়েমি কাটিয়ে আলাদা একটু আমেজে সময় কাটাতে পেরে আনন্দিত সকলেই। নাটোর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকেও ছুটে আসছে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর সহ সব বয়সের মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পারিবার পরিজন নিয়ে অতীত সমৃদ্ধ স্মৃতির সান্নিধ্যে ছুটি কাটাতে পেরে আনন্দিত তারা। দর্শন আরামদায়ক করতে বিভিন্ন সুবিধা বাড়ানোর দাবী তাদের। নাটোর শহরের মাঝে রয়েছে দু’টি দর্শনীয় স্থান। একটি রাণী ভবানীর ঐতিহাসিক রাজ প্রাসাদ, অপরটি হচ্ছে দিঘাপতিয়া উত্তরা গনভবন (দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি)। প্রতি বছর ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর সহ সব বয়সের মানুষ। ঈদের দিন থেকে শুরু করে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে এ দুটি স্থানে। চলবে প্রায় এক সপ্তাহ। দর্শনার্থীরা উত্তরা গণভবন ও রাণী ভবানীর ঐতিহাসিক রাজ প্রাসাদের মনোমুগ্ধকর স্থাপত্য শৈলী, ও রাজবাড়ি এলাকার নৈসর্গিক পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে ফিরে যায় চাঞ্চল্যে ভরা প্রাত্যহিক কর্মজীবনে। বর্তমানে উত্তরা গণভবনের চতুপার্শ্বের লেকের পাড় দিয়ে তৈরী করা পায়ে চলা পথ ধরে দর্শনার্থীরা হেঁটে ঘুরতে পারছেন। গণভবনের চতুপার্শ্বের সৌন্দর্য্য, জানা-অজানা পূরাতন বৃক্ষ, অপার সৌর্ন্দয, বিভিন্ন ধরণের ভাস্কর্য, সাজানো গোছানো বাগান, কুমার প্যালেস, রাণী মহল সব কিছু আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের। এছাড়াও এবছর যোগ হয়েছে সংগ্রহশালা ও চিড়িয়াখানা। যাদুঘরে রয়েছে দিঘাপতিয়া রাজাদের ব্যবহৃত নানা জিনিস, রয়েছে রাজ কন্যা ইন্দুপ্রভার লেখা শতবর্ষ আগের কবিতা ও চিঠি। উত্তরা গণভবনের প্রবেশদ্বারের টিকিট প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য মাথাপ্রতি ২০ টাকা, সংগ্রহশালার টিকিট ২০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য মাথাপ্রতি ১০ টাকা করা হয়েছে । এতে করে সবাই অনায়াসে টিকিট কিনে ভিতরে প্রবেশ ও দর্শন করতে পারছেন। জেলা ও জেলার বাহিরে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কামাল হোসেন, ফিরোজ, সুফিয়া খাতুন, নাসিমা খাতুনসহ দর্শনার্থীরা জানান, নাটোর রাজাবাড়ি আর উত্তরা গনভবন ও এর স্থাপত্য শৈলী, অপার সৌর্ন্দয সহ সবকিছু আকৃষ্ট করছে তাদের। এছাড়াও রাজবাড়ির বিভিন্ন জিনিস নিয়ে সম্প্রতি তৈরী হওয়া সংগ্রহশালা ও চিড়িয়াখানা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এসব সৌন্দর্য দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন দর্শনার্থীরা। ঈদের ছুটির আনন্দে এখানে বেড়াতে পেরেই খুশি তারা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবার পরিজন নিয়ে অতীত সমৃদ্ধ স্মৃতি আর প্রকৃতির সান্নিধ্যে ছুটি কাটাতে পেরে আনন্দিত তারা। সুন্দর আবহাওয়া ও পরিবেশের কারেনই দর্শনার্থী বেশী হচ্ছে বলে দাবি সকলের। মনোরম পরিবেশ দেখে মুগ্ধ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীরা। তবে দর্শনাথীদের দাবী লেক সংস্কার, বসার স্থান সহ আরো কিছু সুবিধা বাড়ালে দর্শনার্থীদের ভীড় আরো বাড়বে, বাড়বে রাজস্ব। যেহেতু প্রবেশদ্বারে প্রবেশমূল্য রয়েছে সে কারণে সংগ্রহশালার জন্য কোন টিকিটের ব্যবস্থা না রাখারও দাবী তাদের । জেলার বাহিরে থেকে আসা দর্শনার্থীরা থাকার জন্য একটি মোটেল নির্মানেরও দাবী জানান। উত্তরা গণভবনের সহকারী ব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার জানান, অন্যান্যবারের তুলনায় এবছর দর্শনার্থীর ভীড় বেশী। দর্শনার্থীদের ভীড়ে হিমশীম খেতে হচ্ছে তাদের। তারপরও সকলের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ ও আনছার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। টুরিষ্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ হাসান জানান, নাটোরের দুইটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তা হলো নাটোর রাজবাড়ী ও উত্তরা গণভবন। এই দুইটি দর্শনীয় স্থানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় তারা কাজ করে চলেছেন। এনডিসি অনিন্দ্য মন্ডল জানান, ঈদের দিন ও পরের দিনে উত্তরা গণভবনের টিকিট বিক্রি থেকে ৩লাখ ৩৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী। অপরদিকে নাটোর রাজবাড়ির দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আবু হাসান জানান, নাটোর রাজবাড়ির প্রবেশদ্বারের টিকিট বিক্রি থেকে দুইদিনে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, এবার নাটোরে দুটি দর্শনীয় স্থান ঘিরে দর্শনার্থীদের ভীড় বেড়েছে। এতে করে রাজস্ব বেড়েছে অনেক। উত্তরা গণভবনের ঐতিহ্য ঠিক রেখে লেক সংস্কারসহ সবরকম সুবিধা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।