নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বড়াইগ্রামে সুদ ব্যবসার জেরে এক নারীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
আজ সোমবার সকালে উপজেলার গড়মাটি মোল্লাপাড়ার একটি তামাক ঘরের ভেতর থেকে ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহটা উদ্ধার করা হয়। নিহত নারীর নাম জাম্বিয়া বেওয়া (৫০)। সে জোনাইল হরিপুরেরর মৃত আফসার আলীর স্ত্রী। জাম্বিয়া বেওয়া গড়মাটি উত্তর পাড়ায় বাবার বাড়িতে বসবাস করত। মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত মোল্লাপাড়ার মৃত তাহের মোল্লার ছেলে নইমউদ্দিন মোল্লাসহ পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর জাম্বিয়া বেওয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর সে স্থানীয় সাইফুল মোল্লার ধানের চাতালে দিনমজুরের কাজ করা শুরু করে। সেখানে কাজ করা অবস্থায় ওই এলাকার নইমউদ্দিন মোল্লার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠলে সে সুদ ও জমি বন্ধকী ব্যবসা শুরু করে। আগস্ট মাসে দিশা সংস্থা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নইমুদ্দিনকে দেয়। সাপ্তাহিক কিস্তির জন্য জাম্বিয়া নইমউদ্দিনকে বললে সে নানা ধরনের টাল-বাহানা শুরু করতে থাকে। এছাড়া আরও প্রায় নগদ ২ লক্ষ টাকা ও জমি বন্ধক নিয়েও নইমউদ্দিনের সাথে ওই নারীর বিরোধ চলছিলো। গত রাত ৮ টার দিকে নইমউদ্দিন টাকা নেয়ার জন্য জাম্বিয়াকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। পরে তার কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। পরের দিন সকাল ৮ টার দিকে নইমদ্দিন নিজেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালামকে মোবাইল ফোনে জানান, জাম্বিয়া তার তামাক ঘরের বাঁশের আড়ার সাথে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান এ ঘটনা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে।
এদিকে জাম্বিয়ার আত্মহত্যার স্থান, ধরণ ও মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে নইমউদ্দিনের বাড়ির পাশে জঙ্গল পরিস্কার করার ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সন্দেহ তৈরি করে।
খবর পেয়ে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আলম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেন এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা খুঁজে বের করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।