নাটোরে বিভিন্ন ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ম্যাজিস্ট্রেট এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও গোয়েন্দা সংবাদ সংস্থার পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজীর সময় ৫ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে নাটোর শহরের নিচাবাজার এলাকার মেমোরী ডায়ানস্টিক সেন্টারে গিয়ে ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবীকালে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আটককৃতরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার গনকপাড়া প্রামের হরমুজ আলীর ছেলে ও প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান,রাজধানীর পূর্ব রামপুর এলাকার আব্দুল হাই খান এর ছেলে ও প্রতিষ্ঠানের সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলম খান, খুলনার কোতয়ালী থানার মিয়াপাড়া মহল্লার আব্দুস সালামের ছেলে ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, খুলনার ফুলবাড়ী এলাকার হাসিব উদ্দিনের ছেলে ও প্রতিষ্ঠানের সদস্য আতিকুর রহমান এবং ঝালকাঠির নলছিটি থানার রায়পুর গ্রামের আফসার আলী খানের ছেলে ও গাড়ী চালক আরিফুর রহমান নয়ন। মেমোরী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান সেলিম জানান, সিরাজুল ইসলাম নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে কয়েকজন ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে মেমোরী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যায়। এ সময় তারা সেন্টারের বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে এবং স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে জরিমানার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ভয়ভীতির এক পর্যায়ে তারা এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এমন ভাবে চাঁদা দাবী করায় তাদের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি তাদের এ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের এবং পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও গোয়েন্দা সংবাদ সংস্থার পরিচয় সহ বিভিন্ন পরিচয় দেয়।
এ সময় পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নাটোর জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক এ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক আব্দুল আওয়াল রাজা জানান, বশে কিছু দিন ধরেই একটি চক্র জেলার বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনাটি তারা প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন তাদের বিষয়ে সঠিক পরিচয় পত্র খেতে চাওয়া বা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বলেন। এর আগে গত শুক্রবার লালপুরের গোপালপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার গিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এরপর শনিবার দুপুরে মেমোরী ডায়গনস্টিক সেনটারের মালিক তাকে জানায় তার সেন্টারে ম্যাজিস্ট্রেট সহ কয়েকজন এসেছে পরিদর্শন করতে। ঘটনাটি জানানোর পর তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ গিয়ে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এলোমেলো তথ্য দিলে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুল মতিন জানান, সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা থানা হাজতে আটক রয়েছে। আটককৃতরা নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও গোয়েন্দা সংবাদ সংস্থার পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।