নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বড়হরিশপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শ্মশানের সেবাইত তরুন দাসকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করা হয়েছে। গত রাতের কোনো এক সময় এই ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে মহাশ্মশানের ভোগ ঘরের বারান্দায় তার হাত-পা ও মুখ বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় মহাশ্মশান কমিটির কর্মচারী ও সদস্যরা। ডাকাতরা মহাশ্মশানের মন্দির সহ অন্যান্য ঘরের গ্রীল ভেঙে কাঁসা পিতলের মুল্যবান বাসন পত্র ও দান বাক্স নিয়ে যায়। নিহত তরুন দাস নাটোর পৌরসভার আলাইপুর ধোপাপাড়া মহল্লার মৃত কালপিদ দাসের ছেলে। খবর পেয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মহাশ্মশান কমিটির সহ-সভাপতি সুবল দাস জানান, তরুন দাসের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাদের খবর দেওয়া হয়। তারাও শ্মশানে গিয়ে দেখে মন্দিরের বিভিন্ন ঘরের লোহার গেট সহ দরজা জানালার গ্রীল ভাঙ্গা। এছাড়াও মন্দিরের কয়েক মন ওজনের তামা,পিতল ও কাঁসার থাল্ বাসন সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবকিছু নিয়ে গেছে।
শ্মশান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য বিপুল দেব জনান, মহাশ্মশানের মুল দরজা ভেঙ্গে সকল বাসন পত্র ৬/৭ মন ওজনের বেশি হবে সেগুলো নিয়ে যায়। এছাড়াও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে শ্মশানে সেখানে শ্মশানের এক কর্মি বা সেবাইত তরুন দাসকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের বিচার দাবী করেন।
নিহত তরুন দাসের ছেলে তপু কুমার দাস জানান, তার বাবা ২০০০ সাল থেকে এই শ্মশানের থাকতেন। তার বাবাকে যারা এভাবে হত্যা করেছে তাদের সকলের বিচার দাবী করেন।
নিহতের ছোট ভাই প্রদিপ কুমার দাস জানান, সে মন্দিরকে ভালোবাসতো এবং সে কালী মায়ের ভক্ত ছিল। এজন্য সে শ্মশানেই থাকতো। তাদের ধারনা যারা ডাকাতি করেছে তাদের চিনে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়েছে।
মহাশ্মশানের মন্দিরের পুরোহিত অরুপ চক্রবর্তি জানান, শ্মশান মায়ের মন্দিরের কাঁসা, পিতল ও তামার ৬/৭ মন বাসন পত্র ছিলো। যেগুলো পূজার জন্য ব্যাবহার হত। সেগুলো সব নিয়ে গেছে। এছাড়াও ভিতরের আরো প্রয়োজনীয় জিনসি পত্র হারিয়েছে। আর ভোগ ঘরের অনেক কিছু চুরি করা হয়েছে। লোহার গ্রীল, কেচি গেট, সহ মুল গেট ভাঙ্গা হয়েছে। দির্ঘ দিন ধরেই তরুন দাস থাকতো শ্মশানে তাকেও হাত-পা বেধে হত্যা করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক ভাবে এটা হত্যাকান্ড বলে মনে করছেন তিনি। ময়না তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে ঘটনার। হত্যাকান্ডের ঘটনায় কারা জড়িত তাদের বিষয়টি তদন্তধীন রয়েছে। ডাকাতির বিষয়টি না হয়ে চুরি হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। এখানে কাঁসার জিনিস পত্র হারিয়েছে। এটা ডাকাতি মনে হয়না। এখানে মুল্যবান কিছু ছিলো না। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হবে। ঘটনাটি তদন্তকাজ চলছে।