নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে মেয়ের জামাইকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন ও শ্বাশুড়ীকে যৌন হয়রানীর মামলায় ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনী গ্রামের অভিযুক্তদের বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হলেও মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম ফরিদ ও মামলা সুত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ভাবনী গ্রামের জামাল শেখের স্ত্রী জেসমিন বেগম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যে, তার প্রতিবেশী কয়েকজন ব্যক্তি তার স্বামীর অসুস্থ্যতার সুযোগ নিয়ে তার সাথে ও তার মেয়ের সাথে প্রতিনিয়ত অশালীন আচোরন করেন এবং বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তাব দেন। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি ঘটনাটি স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের জানান। এরপর তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর বাধ্য হয়ে জেসমিন বেগম তার মেয়েকে পাশের গ্রামের মৃত চান আলীর ছেলে সাজুর সাথে বিয়ে দেন। এরপর থেকে মেয়ে ও জামাই তাদের বাড়ীতে বেড়াতে আসলেই নানা ধরনের ভয় ভীতি দেখায়। গত ২২ জুন মেয়ে ও জামাই বেড়াতে আসলে মামলার অভিযুক্তরা রাতের বেলায় তাদের বাড়ীতে জোর করে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে মেয়ের জামাইকে জোর করে বাড়ীর বাহিরে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে একটি নারকেল গাছের সাথে বেঁধে পিটাতে থাকে। এসময় শ্বাশুড়ী এগিয়ে এসে জামাইকে বাঁচাতে গেলে সন্ত্রাসীরা জামাইয়ের সামনেই জেসমিন বেগমের শরীরের বিভিন্ন গোপন স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানী করে। পরে তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলেও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে তারা থেমে থাকে ও এই সকল নির্যাতন ও যৌন হয়রানীর দৃশ্য উপভোগ করেন। পরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে জামাইয়ের বাঁধন খুলে দেন। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে জেসমিন বেগম বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৬/২০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ঘটনাটি নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানতে পেরে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পরে রাতেই ভাবনী গ্রামে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনী গ্রামের ভাদু মিয়ার ছেলে নয়ন (২৬), ময়েন উদ্দিনের ছেলে রাসেল (৩০), কালুর ছেলে রবিন (২২), আব্দুর জব্বারের ছেলে ময়েন উদ্দিন(৫০), কালুর ছেলে রতন (২৬), দেল মহম্মদের ছেলে আজিজুল ইসলাম (৪০), ছালামত মুন্সির ছেলে বাশার উদ্দিন (৪০), কবিরের ছেলে লিটন। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।