ডেস্ক নিউজ
বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম নিউজ উইক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের তথ্য-উপাত্তর ভিত্তিতে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরেছে। গতকাল প্রকাশ করা এ প্রতিবেদনের শিরোনাম হলো ‘বাংলাদেশ এ গ্রিনার ফিউচার ফর এ ইয়ং ন্যাশন গোয়িং প্ল্যাসেস ফাস্ট’
(Bangladesh A greener future for a young nation going places fast)|
নিউজ উইকের এ সংক্রান্ত প্রচ্ছদে রয়েছে শেখ হাসিনার ছবি এবং কয়েকটি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের নাম। বিবরণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উদীয়মান জাতি হিসেবে বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল একটি জাতির ভবিষ্যৎ পানে ছুটে চলার প্রত্যাশা নিয়ে গত বছর তার স্বাধীনতার ৫০তম
বার্ষিকী উদযাপন করেছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অর্ধ-শতাব্দীতে প্রবেশ করেছে শক্তিশালী অর্থনীতির দিক-নির্দেশনার আলোকে। এটি বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দ্রত বর্ধনশীল অর্থনীতির অন্যতম একটি দেশ হিসেবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে অদম্য গতিতে। অর্থনীতির মূল সেক্টরজুড়ে ক্রমাগত উন্নয়ন এবং দারিদ্র্যের মাত্রা কমাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধনে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ তার দারিদ্র্যের হার কমিয়ে ১২.৫ শতাংশে স্থিত হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, করোনা মহামারি আঘাত হানার আগে বাংলাদেশের জিডিপি দ্রুতগতিতে বাড়ছিল। ২০১৯ সালে অর্থনীতি ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারি সত্ত্বেও ৩.৫ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে এবং ২০২১ সালে তা ৬.৯ শতাংশ ছিল। এ বছরের মে মাসে ২৭তম নিকি ফিউচার অব এশিয়া কনফারেন্সে ‘আমরা চলতি অর্থ বছর প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হবে বলে আশা করছি’- এমন অভিমত পোষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তত্ত্বাবধান করছেন দেশীয় অর্থনীতির দ্রুত রূপান্তর। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প-কারখানার অবদান ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ বা এক তৃতীয়াংশেরও বেশি। এ সময়ে জিডিপিতে উৎপাদনের অবদান ১৯৮০ সাল থেকে দ্বিগুণ হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে রপ্তানি বেড়েছে ২০ গুণ, যা এখন ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থ বছর দেশের শিল্প খাত ১০.৪ শতাংশেরর বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং গত দুই বছরে যথাক্রমে ১০.৩ শতাংশ এবং ৩.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। যদিও চলতি অর্থ বছর উৎপাদন বৃদ্ধি ১২.৩ শতাংশ পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা গত বছর ১১.৫৯ শতাংশ ছিল। ১৬ কোটি ৫০ লাখেরও অধিক জনসংখ্যার দেশটি উন্নয়ন কর্মকান্ডে অধিকাংশ মানুষকেই উজ্জীবিত করেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছর বাংলাদেশ নারীদেরর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। তৈরি পোশাক শিল্পের মতো সেক্টরগুলোও বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে অনন্য অবস্থানে নিয়েছে। বিবরণে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বেরর বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারকদের মধ্যে অন্যতম, আরএমজি খাত একাই বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৪ শতাংশ বলে ম্যাককিন্সি অ্যান্ড কোম্পানি সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রায় এক দশক আগে গার্মেন্টস সেক্টরে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনার পর কারখানার নিরাপত্তা এবং শ্রমিকের জীবনমানের উন্নয়ন ছাড়াও কর্মপরিবেশ নিরাপদ করতে বিশেষ যত্নবান হওয়ায় বাংলাদেশকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় এগিয়ে থাকা দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ এমন একটি জাতিতে পরিণত হয়েছে যা সত্যিকার অর্থেই সমৃদ্ধির ভবিষ্যৎ পানে তাকিয়ে রয়েছে।’ দীর্ঘ বিবরণে ‘দারিদ্র্য, খরা, বন্যা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের বাংলাদেশ কীভাবে উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে, কীভাবে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মহাযজ্ঞে একীভূত করা হয়েছে, প্রতিটি মানুষ তার সাধ্য অনুযায়ী উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করেছে, পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে আলোর পথ দেখানো হয়েছে, গ্রামগুলো শহরের মতো গড়ে উঠছে’ ইত্যাদি সব বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে। এদিকে প্রবাসীরা মনে করছেন, মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি-জামায়াত জোটের চলমান অপপ্রচারণা রুখে দিতে নিউজ উইকে এ ধারাবিবরণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।