বুধবার ফ্রান্সের নিস শহরে নটরডেম ক্যাথেড্রাল এলাকায় তিউনিশিয়ান শরণার্থী কর্তৃক গির্জায় হামলা করে এক বৃদ্ধ মহিলার শিরচ্ছেদসহ তিন জনকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও এই হামলাকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। মুসলিম নেতারা ধর্মের নামে এই হামলাকে অগ্রহণযোগ্য ও এই সহিংসতা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, তিউনিসিয়ার ২১ বছর বয়সী নাগরিক ইব্রাহিম আয়ু-সাউয়িকে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত মাসেই অবৈধভাবে ফ্রান্সে প্রবেশ করে সে। হামলার সময়, তার কাছে ৩টি ছুরি এবং কোরআন শরিফ ছিলো। বর্তমানে, আহত অবস্থায় পুলিশি হেফাজতে রয়েছে আততায়ী।
বৃহস্পতিবার, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ছুরি নিয়ে গির্জায় ঢুকে পড়ে সে। হত্যা করে দুই নারীসহ তিনজনকে।
ইতিমধ্যেই মুসলিম শরণার্থী কর্তৃক এই হামলার কারণে বেশ আতঙ্কেই আছেন ফ্রান্সে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়। তাদের ধারণা এই ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে সমগ্র ফরাসী মুসলিম সমাজের উপর।
হামলার নিন্দা এবং আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কোন যুক্তিতেই সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করা যায় না। যেই এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকুক সে কোন ধর্মের এবং মনুষত্ব্যের প্রতিনিধিত্ব করে না। তুরস্ক সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত প্রতিটি ফরাসী নাগরিকদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়।
হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, এইসব সহিংসতা ও উগ্রতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ফ্রান্সে সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। এই ধরণের হামলা কেবল ঘৃণাই ছড়াতে পারে কোন শান্তি নয়।
মিশরের বিখ্যাত আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও নিন্দা জানানো হয় বর্বর এই সন্ত্রাসী হামলার। আল আযহারের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমাদ আল তাইয়েব বলেন, কোন সূত্রেই এরকম সন্ত্রাসবাদী হামলার বৈধতা নেই। এই ধরণের হামলা সরাসরি ইসলামে শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক। এসময় তিনি কোন নির্দিষ্ট বিশ্বাসের মানুষের প্রতি এই ধরণের সহিংসতা বৃদ্ধির ব্যাপারেও সতর্ক করেন।
আল তাইয়েব বলেন, সন্ত্রাসবাদের কোন ধর্ম নেই। যে সকল মুসলমান এইসব সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত তারা না ইসলামকে ধারণ করে না শান্তিকামী মোহাম্মদ (সা.) কে ধারণ করে।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, এই ধরণের হামলা সব ধর্মের মূল্যবোধ, মানুষের বিশ্বাস ও সাধারণ বোধে আঘাত করে। সৌদি রাজতন্ত্র এই ধরণের হামলা কোনভাবেই সমর্থন করে না।