ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম হল ভিপি নুর। এটা ডাকসু’র ভিপি হিসেবে নুরুল হক নুরের জনপ্রিয়তা, নাকি সস্তা আলোচনায় আসার কৌশল- তা ভিপি নুরই ভালো বলতে পারবেন। তবে নুরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং কৌশলের সাথে অনেকেই শিবিরের মিল খুঁজে পান। ভিপি নুরকেও তাদের অংশ বলে মনে করেন কেউ কেউ। অবশ্য এই ধরণের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ই এসব বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়। ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা রাশেদ, ফারুক, নুর এদের অনেকেরই নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘স্বীকৃত খুনি’দের নামের সাথে মিলে যায়, বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ।
এ সকল বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচনাও হয় অনেক। প্রাক্তন বা বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই আলোচনায় অংশ নেন। কারো নামের সাথে নাম মিলতেই পারে। তবে কাজও যদি মিলে যায়, তাহলে প্রশ্ন উঠাও স্বাভাবিক। তবে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সচেতন অনেকেই মনে করেন, নুর যেভাবে, যে সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে ডাকসু ভিপি হল, এখন তো জাতীয় রাজনীতিতেও উঠে গেছে; সেই সেন্টিমেন্ট এখন আর নেই। নুর যে ক্ষমতা লিপ্সু, তা এখন ক্যাম্পাসে সবাই বুঝে গেছে। কারণ কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম। কিন্তু এটাকে একটা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে উপস্থাপন করেছে নুর। আর তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরাও কেউ নুরের পাশে নেই।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, এই রকম বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় ভিন্ন বিষয়ে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কোটা আন্দোলনকারী নুর আর এখনকার সদ্য সাবেক ভিপি নুরের পার্থক্য অনেক। তখন নুর সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা শুনত। আর এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের বুঝাতে আসে। এই সময়ে নুরের পোশাক, আর এখন নুরের পোশাক দেখলেই কেমন যেন একটা ধাক্কা লাগে। সেইসাথে আচরণ তো বটেই। করোনা যেমন খুব দ্রুত কিছু মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছে, কোটা আন্দোলনও তেমনি নুরের ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছে।
নুরকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন, এই রকম একজন শিক্ষার্থী জানান, নুর সব সময়ই ‘মাল্টিপল আইডেন্টিটি’র লোক। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সে নিজেকে ‘ছাত্রলীগ’ বলে পরিচয় দিতো, যাতে ক্যাম্পাসে কোন সমস্যা না হয়। আবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের জড়ো করত সরকার বিরোধী ডাক দিয়ে, আবার গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মায়ের মতো বলেও উল্লেখ করেন নুর। আবার গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে সারাদিন সরকারকে বিসদ্গার করে বেড়ায়, জ্বালাময়ী হয়ে উঠার চেষ্টা করে। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই যে নুর কি বা রাজনৈতিক আদর্শ বা কি- তা বুঝা যায় না। তবে অনেকটা শিবিরের মতো বলে উল্লেখ করেন তিনি। আর একটু যুক্ত করে বলেন, অনেক ছাত্রলীগ নেতা অনেক সময় তার অপছন্দের ব্যক্তিকে শিবির বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। এতে করে শিবির বিষয়টা অনেকটা সস্তা হয়ে গেছে। পচে গেছে। তবে সত্যিকার শিবির এখনো আছে। তারা কিছুটা বহুরূপী হয়ে আছে।