ডেস্ক নিউজ
কক্সবাজার ও বান্দারবানের সীমান্তবর্তী ঈদগড় ইউনিয়নের সীমানায় পাহাড় ভেদ করে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা মেঠোপথের মাঝেই নৈসর্গিক লীলাভূমি ‘কাগজিখোলা নীলাদ্রী লেক’। উঁচু-নিচু পাহাড়ের চূড়ায় সবুজের সমারোহ ও সুদীর্ঘ জলরাশির মিলনমেলা যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণপিপাসুদের।
দেশের বিখ্যাত কোনো লেক কিংবা রাঙামাটির লেকের সৌন্দর্যকে হার মানাবে নতুন করে উদ্ভাবন হওয়া পাহাড়ি চূড়ায় অবস্থিত এই লেক।
এই লেকের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে যে কারও চোখ জুুড়িয়ে যাবে। উঁচু-নিচু পাহাড়ে যেন সবুজের গালিছা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ লেক ভ্রমণপিপাসুদের মুগ্ধ করছে। পাহাড় আর কার্পেটিং করা কালো রঙের সড়কের মিতালি যেন এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণের সেতুবন্ধন তৈরি করে দিয়েছে।
এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় দূরদূরান্তের পর্যটকদের কাছে এখনও তেমন পরিচিত হয়ে উঠেনি। যদিও প্রতিদিন কক্সবাজার জেলা এবং দূরদূরান্তের পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক।
যদিও সরকারিভাবে এখনও পৃষ্ঠপোষকতা ও রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় তেমনভাবে ফুটে উঠেনি। গত ১৪ ডিসেম্বর বেসারিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন কাগজিখোলা নীলাদ্রী লেকের উদ্বোধন করেছেন। তবে এই মুহূর্তে আগত দর্শনার্থীরা বলছেন, লেকে এখনও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়নি। বিশেষভাবে নারী দর্শনার্থীদের সৌচাগারের জন্য পড়তে হবে বিপাকে।
ভ্রমণপিপাসুরা মনে করছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নৈসর্গিক এই লেক ও মনোরম পাহাড় হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণী পর্যটন স্পট। কক্সবাজারের সদ্যঘোষিত ঈদগাঁও উপজেলা বাস স্টেশন হয়ে ১০ কিমি পূর্বে রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়ন। ঈদগড় বাজার থেকে ৭ কিমি উত্তরে বাইশারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডেই অবস্থিত কাগজিখোলা গ্রাম। সেই গ্রামের আছে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া দীর্ঘ জলরাশির এই লেক। যার নামকরণ হয়েছে ‘কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক’। আর লেকের চার পাশে রয়েছে উঁচু-নিচু মনোরম পাহাড়।
কক্সবাজারের সিনিয়র অ্যানাস্থিওলজিস্ট ও ঈদগড়ের কৃতী সন্তান ডা. বিধান পাল বলেন, যে লেকটি দেখা গেছে এটি রাঙামাটির তুলনায় কোনো অংশে কম নয়। প্রাকৃতিকভাবে এত সুন্দর বলার মতো না। এক পাশে পাহাড় এক পাশে বাউকুল বাগানসহ অন্যন্য সুন্দর করেছে এই লেকে। ঈদগড়ের মানুষ হিসেবে তিনি সবাইকে সেখানে ভ্রমণ করার কথা বলছেন।
পার্শ্ববর্তী বাইশারী থেকে আসা চাকমা তরুণী বলেন, এই লেকটাকে ঢেলে সাজাতে হবে। গহীন পাহাড়ের নিচে হওয়াতে নিরাপত্তা নিয়েও একটু ভয় আছে। পাশাপাশি নারী পর্যটকসহ সবার ক্ষেত্রে শৌচাগার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে নতুন উদ্ভাবন হওয়া লেকটি দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, এই এলাকাটিকে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক করার স্বপ্ন আমার অনেক দিনের। এলাকাটি দুর্গম ও রাস্তাঘাট না থাকায় এতদিন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, বান্দরবানের বীর পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুরের ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টায় ঈদগড় বাজার থেকে কাগজিখোলা পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত সড়কটি কার্পেটিং করে দেওয়ায় যাতায়াতের ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। তাই এখন কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক করার উদ্যাগ নিয়েছি।