ডেস্ক নিউজ
পাঁচ দেশে বিনিয়োগের অনুমতি পাচ্ছে চার কোম্পানি। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে- বিএসআরএম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনেটা এবং কলম্বিয়া গার্মেন্টস। এই চার কোম্পানি নতুন করে এক কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েছে। বর্তমান বিনিময়হার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১১৬ কোটি টাকা।
গত বুধবার বিদেশে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটির বৈঠকে এই অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জানিয়েছেন।
বৈঠকে বিডি ভেঞ্চারের আবেদন নাকচ করা হয়েছে। আর মেঘনা গ্রæপের প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ সিড ক্রাশিংয়ের আবেদন আরও পর্যালোচনার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশি অনেক প্রতিষ্ঠানের বিদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ থাকলেও এতোদিন কোনো নীতিমালা ছিল না। বিদেশে বিনিয়োগ বিষয়ে গত সপ্তাহে নতুন বিধিমালা জারি করে সরকার। অবশ্য অনেক আগে থেকে রফতানিকারক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কেস টু কেস ভিত্তিতে অনুমতি দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এ পর্যন্ত মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। যার মধ্যে মোবিল যমুনা ২০১৯ সালে মায়ানমারের বিনিয়োগ ফেরত এনেছে। গত বুধবারের বৈঠকটি ছিল ওই কমিটির শেষ বৈঠক। এখন কেউ বিদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলে নতুন বিধিমালার আলোকে আবেদন করতে হবে। জানা গেছে, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ফিলিপাইনে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েছে। কলম্বিয়া গার্মেন্টস হংকংয়ে ১৫ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েছে। স্টিল খাতের প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমকে হংকংয়ে ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ওষুধ খাতের রেনেটাকে যুক্তরাজ্যে ৫০ লাখ ডলার এবং আয়ারল্যান্ডে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমতি দেয়া হয়েছে। রেনেটার বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে সাত হাজার ১০০ ইউরো এবং যুক্তরাজ্যে ১০০ ডলারের কোম্পানি রয়েছে। এখন তারা মূলধন বাড়ানোর অনুমতি পেল। বিএসআরএম ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কেনিয়াতেও বিনিয়োগ রয়েছে।
বিএসআরএম ২০১৬ সালে কেনিয়ায় ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারের বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েছিল। একই বছর স্কয়ার ফার্মা কেনিয়ায় ১ কোটি ২০ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমতি নেয়। ওই বৈঠকে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল- মেঘনা গ্রæপের সোনারগাঁ সিড ক্রাশিং। প্রতিষ্ঠানটি সিঙ্গাপুরে ২৫ হাজার ডলার বিনিয়োগের আবেদন করেছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনো ইআরকিউ হিসাব না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে আরও পর্যালোচনার কথা বলা হয়েছে। আর বিডি ভেঞ্চারের কোনো বৈদেশিক মুদ্রা আয় না থাকায় তাদের আবেদন নাকচ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের অনুমতি নিয়ে চিঠি দিয়ে শিগগিরই এ তথ্য সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেয়া হবে। বিদেশি বিনিয়োগের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী , নতুন করে কেউ বিদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হলে নতুন বিধিমালার আলোকে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে একজন রফতানিকারক তার ৫ বছরের বার্ষিক গড় রফতানি আয়ের ২০ শতাংশ অথবা নিট সম্পদের ২৫ শতাংশের মধ্যে যা কম, শর্ত সাপেক্ষে সে পরিমাণ বিনিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কেবল সমজাতীয় ব্যবসায় বিদেশে বিনিয়োগ চাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে প্রাথমিক যাচাই শেষে চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গভর্নরের নেতৃত্বাধীন ১৫ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের বাছাই কমিটিতে পাঠাবে। সেখানে অনুমোদন দিলে বিদেশে বিনিয়োগ করা যাবে। বিনিয়োগটা এমন দেশে হতে হবে যেখান থেকে অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনায় কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোলের যেসব দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে বিনিয়োগ করা যাবে না।