ডেস্ক নিউজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনকে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে অভিমত প্রকাশ করে এমেরিটাস অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ গেটিসবার্গের ভাষণের চেয়েও মহোত্তম।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে বিএসইসি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।
আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বর পেনসিলভেনিয়ার গেটিসবার্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন একটি ভাষণ দেন। আব্রাহাম লিংকনের এ বিখ্যাত ভাষণই ‘গেটিসবার্গ অ্যাড্রেস’ নামে পরিচিত।
অন্যদিকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ওইদিন দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করা এ ভাষণ শেষ হয় বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ১৮ মিনিটের এ ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ।
বিএসইসি আয়োজিত আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের প্রসঙ্গ তুলে ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ গেটিসবার্গের ভাষণের চেয়েও মহোত্তম। বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক অগ্রগতির ভিত্তি।
তিনি বলেন, এরকম একজন মহান নেতাকে কোনো বাঙালি হত্যা করতে পারে! এ কলঙ্ক বাঙালি জাতিকে আজীবন বহন করতে হবে। জাতি হিসেবে বাঙালি অকৃতজ্ঞ নয়, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য পুরো জাতিকে মূল্য দিতে হচ্ছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম
ড. এ কে আজাদ চৌধুরী ১৫ আগস্টের ঘাতকদের প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার ও দণ্ড কার্যকরের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় তার পরিবারের চেয়ে দেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এজন্য তিনি তার জীবনের সোনালি সময়ে বছরের পর বছর কারাবরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হৃদয়ের বিশালতা দিয়ে আমৃত্যু মানুষকে ভালোবেসেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএসইসি আয়োজিত রোডশোতে বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তন এসেছে। করোনার মধ্যেও জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রেখে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
অধ্যাপক শিবলী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দায়িত্ব, কর্তব্য ও দূরদর্শিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের আজকের উন্নয়নের পেছনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও রাজনৈতিক দর্শন এবং তা বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, একজন মানুষ কতটা সাহসী ও বিশাল হৃদয়ের অধিকারী হতে পারেন বঙ্গবন্ধু তা বিশ্বকে দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের আজকের এ অর্জন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আরও অনেক আগেই অর্জিত হতো। এমন মহান নেতার মৃত্যু জাতিকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছে।
আলোচনায় আরও অংশ নেন- বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, কমিশনার আবদুল হালিম ও নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল ইসলাম।