ডেস্ক নিউজ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষে ভারতের প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে। নয়াদিল্লির ঐতিহ্যমন্ডিত প্রেস ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় নবগঠিত অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টারটি নয়াদিল্লির বাংলাদেশ মিশন ও প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে। আজ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ উপলক্ষে তিনি গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আগরতলা হয়ে রাজধানী দিল্লি পৌঁছেছেন। মিডিয়া সেন্টারের প্রবেশ পথে বঙ্গবন্ধুর একটি পূর্ণাবয়ব প্রতিকৃতি স্থাপিত হয়েছে। এটিরও উন্মোচন করবেন তথ্যমন্ত্রী। বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং প্রেস ক্লাব ইন্ডিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। তথ্যমন্ত্রী ও অন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করবেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ এবং প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল বিনয় কুমার। সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে, প্রতি পাঁচ বছর পর পর আলোচনার ভিত্তিতে মিডিয়া সেন্টারের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কাজ করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এ জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশন ইতিমধ্যেই একটি প্রজেক্টর প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়াকে উপহার দিয়েছে। মিডিয়া সেন্টারের মধ্যে দুই অংশের স্থায়ী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছে। একাংশের আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক ফুটে উঠেছে। অন্য অংশে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন মুহূর্ত প্রদর্শিত হয়েছে। এতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অন্তরঙ্গ মুহূর্ত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের মুহূর্তগুলো। বাংলাদেশ মিশন সহযোগিতার অংশ হিসেবে উন্নতমানের কম্পিউটার উপহার দিয়েছে প্রেস ক্লাবকে। অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সঙ্গে ভারতের প্রেস ক্লাবের সভাপতি উমাকান্ত লখেড়াসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত গণমাধ্যমের সহযোগিতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ১৯৫৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এক নম্বর রায়সিনা রোডের এই ভবনটি সাংবাদিকদের ক্লাব হিসেবে দান করেন। বহু রাজনৈতিক উত্থান পতনের সাক্ষী এই ক্লাবের সাংবাদিক সদস্য সংখ্যা বর্তমানে সাড়ে চার হাজার। দিল্লিতে কর্মরত জাতীয় ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই এর সদস্য।
তথ্যমন্ত্রীর অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্চ মাসে ঢাকা সফরের পর এই প্রথম বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদ চার দিনের সফরে দিল্লি আসছেন। সফরে আজ সোমবার প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানের পর বিকালে তিনি সাউথ ব্লকে পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি মঙ্গলবার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকরের সঙ্গেও বৈঠক হতে পারে। এ ছাড়া তথ্যমন্ত্রী দিল্লিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে একটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করবেন। সেসময় আকাশবাণীর বিশিষ্ট সাংবাদিক ইউ এল বড়ুয়া মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে যেসব ধারাবিবরণী তৈরি করেছিলেন তা নিয়েই রচিত হয়েছে এই পুস্তিকাটি। এ ছাড়া তথ্যমন্ত্রী দিল্লির থিংক ট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন। ৮ সেপ্টেম্বর তিনি দিল্লির সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হতে পারেন। ৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় ফিরবেন।