অনিয়ম বন্ধ করে প্রকৃত মাতৃত্বকাল ভাতাভোগী যাচাই-বাছাইয়ে এবারে তৃণমূলে নেমেছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসন। বিভিন্ন সময় অর্থের বিনিময়ে ভিজিডি, বয়স্ক, মাতৃত্বকালসহ বিভিন্ন ভাতাভোগী নির্বাচন, অযোগ্য ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করা, পক্ষপাতিত্ত্বসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এসব অনিয়ম বন্ধে সরেজমিনে মাঠ পর্যায় থেকে উন্মুক্তভাবে যাচাই-বাছাই করে ভাতাভোগী নির্বাচন করছে উপজেলা প্রশাসন। বাগাতিপাড়া উপজেলায় প্রথমবারের মত এ ধরনের স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভাতাভোগী নির্বাচন করা হচ্ছে বলে জানালেন ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল। এর ফলে বাগাতিপাড়ায় বদলে গেছে ভাতাভোগী নির্বাচনের চিত্র। আবেদনকারীরাও যাচাই-বাছাইয়ে স্বচ্ছতার কথা স্বীকার করেছেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুন জানান, সম্প্রতি ইউনিয়ন পর্যায়ে সরাসরি আবেদন গ্রহন করে যোগ্য ও উপযুক্ত ভাতাভোগীকে নির্বাচন করার কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বরদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাতাভোগী নির্বাচন করা হতো। এদিকে মঙ্গলবার পাঁকা ইউনিয়নে এবং সোমবার দিনব্যাপী বাগাতিপাড়া সদর ইউনিয়নে এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলে। সেখানে ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দূল হাদী, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খাদেমূল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রমুখসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সকল ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উন্মুক্ত বাছাই শেষে আবেদনকারিদের মধ্যে ৮০ জনকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। এর আগে ফাগুয়াড় দিয়াড় ইউনিয়নেও একই কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা কর্মসূচীর আওতায় এ উপজেলায় মোট ৫টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে ৮০ জন করে মোট ৪০০ জন নারীকে মাতৃত্বকাল ভাতা দেওয়া হবে। তারা প্রত্যেকে তিন বছর ধরে মাসে ৮০০ টাকা করে ভাতা সুবিধা পাবেন।
বাগাতিপাড়া সদর ইউনিয়নে সুবিধা নিতে আসা আবেদনকারী নারীদের মধ্যে রুলিয়া বেগম, মীরা বেগম, সামিয়া বেগমসহ কয়েকজন জানালেন, কোন অনিয়ম এবং অর্থ ছাড়াই এবার বাছাই প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে চলছে। এতে যোগ্যরাই ভাতা সুবিধার জন্য তালিকাভুক্ত হচ্ছে। তারা সরেজমিনে যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল জানান, প্রকৃত দুঃস্থ মাতৃত্বকাল ভাতাভোগী নির্বাচনের লক্ষ্যে সরেজমিনে তথ্য যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে প্রকৃত ভাতাভোগী নির্বাচনের ফলে বিষয়টিতে স্বচ্ছতাও থাকছে। তৃণমূল থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃতদেরই এ সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। তাছাড়া বিগত সময়ে বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মেরও সুযোগ থাকছে না।