নাটোর প্রতিনিধি:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর।
প্রতিমন্ত্রী আজ শনিবার সিংড়া উপজেলা কোর্ট মাঠে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলায় এক লক্ষ গাছের চারা রোপন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গাছের চারা বিতরণ এবং কৃষকদের মাঝে মাসকালাই চাষে প্রণোদনার সার ও বীজ এবং সব্জি বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক মন্দা দেখা দিলেও উন্নয়নের সূচকগুলোতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। করোনা সংক্রমণ এবং বন্যা পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে দেশের মেগা প্রকল্পসহ উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো চলমান রাখা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার কারনে কর্মহীন মানুষের হাহাকার এবং খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলেও শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও সৎ নেতৃত্বে আমরা এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছি। দেশে কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল হয়ে উঠেছে। দেশে খাদ্য ঘাটতি হয়নি। বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন এই দেশে আছে সোনার মাটি আর পরিশ্রমী মানুষ। পরিশ্রমী এসব মানুষকে কর্মে নিয়োজিত করতে পারলে এই দেশ হবে ‘সোনার বাংলা’। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন পূরণ করে তাঁর রক্তের ঋণ শোধ করবো আমরা। এই লক্ষ্য পূরণে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারনে খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। কৃষি বান্ধব সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও খালগুলো পুনঃখনন করে সেচের ব্যবস্থা, সারের মূল্য হ্্রাস ও সহজলভ্য করা, মাত্র দশ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে ভর্তূকির অর্থ সময়মত কৃষকদের নিকট পৌঁছে দেওয়ার মত কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ থেকে বিদ্যুৎ স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়নের সুফল পেয়ে অন্ধকার গ্রামগুলো জেগে উঠেছে। মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি সঞ্চার হয়েছে। মহাসড়কগুলোর উন্নয়ন এবং চাহিদা অনুযায়ী আঞ্চলিক, জেলা ও স্থানীয় সড়ক নির্মাণের ফলে মানুষের জীবনযাপন উন্নত হয়েছে, কৃষকেরা অনায়াসে তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ সুবিধা পাচ্ছেন। সকল মানুষের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ সুদৃঢ় হয়েছে।
পলক আরো বলেন, শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনই নয়, তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ফলে মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতি সহজ ও সুন্দর হয়েছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে থেমে যায়নি দেশের সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম। তারা অনলাইনে পাঠ গ্রহন করছে, পরীক্ষাও দিচ্ছে। এপ্রিল মাস থেকে বিচার ব্যবস্থায় ভার্চূয়াল আদালতের কার্যক্রমের মাধ্যমে লক্ষাধিক মামলার শুনানী হয়েছে, ৫০ হাজার ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর হয়েছে এবং ২০ হাজার বন্দি মুক্ত হয়েছেন। এখন টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে অসুস্থ্য ব্যক্তিরা সহজেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করতে পারছেন।
‘মুজিব বর্ষের আহ্বান, তিনটি করে গাছ লাগান’ শ্লোগানকে উদ্বৃত করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু। সম্পদ প্রদান, পরিবেশ সুরক্ষা, নিরবচ্ছিভাবে অক্সিজেন বিতরণ করে গাছ আমাদের উপকার করে। তাই সবাইকে বেশী করে গাছের চারা রোপন এবং সংরক্ষণ করতে হবে আমাদের নিজেদের স্বার্থেই।
উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ১২টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মাঝে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ এবং উপজেলার মোট ৬০০ কৃষকের মাঝে সব্জি বীজ এবং মাসকালাই বীজ ও সার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যৌথভাবে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস ও উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন।