নিজস্ব প্রতিবেদক:
৪৭ বছর কেটে গেছে কেউ কথা রাখেনি। অপেক্ষায় কেটেছে ৪৭ বছর। আত্রাই নদে ব্রীজ নির্মান হয়নি। ব্রীজ নির্মান না হওয়ার চরম কষ্টে রয়েছেন দশ গ্রামের মানুষ। দুর্ভোগ সয়ে এখনো এলাকার মানুষ বর্ষায় খেয়া নৌকা আর শুকনো মৌওসুমে বাঁশের সেতুতে কষ্টে আত্রাই নদ পারাপার হচ্ছে। একটি ব্রীজ নির্মান না হওয়ার ফলে এসব এলাকার রাস্তা ঘাটেরও দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি।
এ ভাবেই বলছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল হান্নান । আব্দুল হান্নান নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। আত্রাই নদের তীর ঘেঁষেই তাঁর বাড়ি। তাঁর মতো হাজারো মানুষের দাবী বিলহরিবাড়ি-সাবগাড়ি বাজার পয়েন্টের আত্রাই নদে একটি পাকা ব্রীজ নির্মানন করে দেওয়া হোক।
শনিবার সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আত্রাই নদে খেয়া নৌকার পরিবর্তে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। উঁচু নিচু হওয়ায় বয়স্করা তো বটেই, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শেষ থাকেনা। নিরুপায় মানুষ তবুও ঝুঁকি নিয়ে আত্রাই নদ পারাপার হয়।
নদটির পুর্ব পাশের হরদমা ও কারিগরপাড়া ও বিলহরিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, সানোয়ার হোসেন, আশরাফুল ইসলামসহ অন্তঃত পক্ষে ১৫ জন বলেন, আত্রাই নদে ব্রীজ না থাকায় তাদের গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। নদটি খরস্রোতা হওয়ায় খেয়া নৌকায় পারাপার হতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। ছেলে মেয়েদের স্কুল-কলজের যাতায়াত, জমির ফসল বেচা- কেনা সহ উপজেলা সদরে যেতে হয় আত্রাই নদ পার হয়ে। ভরা বর্ষায় খেয়া নৌকা ডুবি এবং শুকনোয় বাঁশের সাঁকোতে নৌকা পার হতে হয়। এতে দুর্ভোগ-ঝুঁকি দুই থাকে তাদের।
সাবগাড়ি বাজারের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর আলী বলেন, এলাকাটি কৃষি প্রধান এবং চলনবিল অধ্যুষিত। সাবগাড়ি বাজার সংলগ্ন ঘাট হয়েই নদের উত্তরপাশের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরিবাড়ি, কারিগরপাড়া, হরদমা এবং সিংড়ার কৃষ্ণনগর,কাউয়াটিকিরি, পানলি ও ডাহিয়া গ্রামের মানুষ ও তাদের খেতের ফসল নিয়ে পারাপারসহ জেলাসহ দেশের আভ্যন্তরিণ জেলাতে যাতায়াত করে থাকেন। তাছাড়া পশ্চিম পাশের সাবগাড়ি, রাবারড্যাম, যোগেন্দ্রনগর, ও ভিটাপাড়া গ্রামের মানুষ ওই গ্রামগুলোর সাথে যোগাযোগ এবং চলনবিলের ফসল নিয়ে আসে। ব্রীজ না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খেয়া নৌকার মাঝি সাদেক আলী জানান, প্রায় ২৫ বছর যাবৎ তিনি খেয়া নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপারা করে আসছেন। পারাপারের জন্য বছরে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা অথবা ধান নিয়ে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে খেয়া নৌকা থাকলেও শুকনো মৌসুমে এসে বাঁশের সাকো তৈরি করেন। তবে এখানে একটি ব্রীজ করা হলে তাদের কষ্টটা অনেক লাঘব হবে এবং এলাকার মানুষের উন্নত জীবন যাপন করতে পারবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গেল ১০ বছরে জনগুরুত্বপুর্ন অনেক জায়গায় ব্রীজ করা হয়েছে। অতি দ্রুত এই ব্রীজটিও হয়ে যাবে।