করোনার সম্ভাব্য টিকার কার্যকারিতা মূল্যায়নে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ছয়টি দেশের ল্যাব নিয়ে বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক গড়েছে অলাভজনক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই)। সংস্থাটির ভাষ্য, এর ফলে বিজ্ঞানী ও ওষুধ নির্মাতারা নিজেদের উদ্ভাবন নিয়ে তুলনা করতে পারবেন এবং সবচেয়ে কার্যকর টিকাপ্রাপ্তি ত্বরান্বিত হবে।
প্রাথমিকভাবে ছয়টি দেশের একটি করে ল্যাব এই নেটওয়ার্কের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়েছে আইসিডিডিআর,বির ল্যাব। বাকি পাঁচটি ল্যাব হচ্ছে নেক্সেলিস (কানাডা), পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (যুক্তরাজ্য), ভিসমেডিরিশ্রল (ইতালি), ভাইরোক্লিনিকস-ডিডিএল (নেদারল্যান্ডস) ও ট্রানস্লেশনাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (ভারত)।
আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেনস বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য সিইপিআইয়ের প্রচেষ্টার আমরা প্রশংসা করি। টিকা মূল্যায়নে কয়েক দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি সংস্থা হিসেবে আমরা নেটওয়ার্কটিতে অবদান রাখতে আগ্রহী।’
সিইপিআইয়ের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মেলানিয়া সাবিল বলেছেন, একটি টিকার সঙ্গে আরেকটির তুলনা করে উদ্ভাবকরা যাতে সবচেয়ে কার্যকর টিকা উন্নয়নে প্রতিযোগিতা করতে পারেন, সেই চিন্তা থেকে এই নেটওয়ার্কের ধারণা এসেছে। ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার এই ল্যাবগুলো কভিড-১৯ রোগের সম্ভাব্য টিকার ট্রায়ালের নমুনা বিশ্লেষণ করে এক জায়গায় আনবে, যেন সব ট্রায়াল একই ছাদের নিচে হচ্ছে।
সাবিল বলছেন, ‘যখন কোনো নতুন রোগের টিকা তৈরি শুরু হয় প্রত্যেকে নিজেদের মতো করে উদ্ভাবনের চেষ্টায় থাকে। তারা আলাদা প্রটোকলে কাজ করে। কেন্দ্রীয়ভাবে ল্যাব থাকলে আমরা সহজে টিকাগুলো মূল্যায়ন করতে পারব। এর মাধ্যমে সবচেয়ে কার্যকর টিকাপ্রাপ্তি ত্বরান্বিত হবে।’
টিকা তৈরির সময় সাধারণত ল্যাবগুলো নিজেদের মতো করে হিউম্যান ট্রায়ালের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে। কতটুকু অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, কতটুকু নিরাপদ, সেটি অন্যরা প্রাথমিকভাবে জানতে পারে না।
সিইপিআই বলছে, সম্ভাব্য টিকার উদ্ভাবকরা বিনা মূল্যে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন। এই মুহূর্তে নেটওয়ার্কের অধীনে বিভিন্ন টিকার ট্রায়ালের প্রথম দুই ধাপের তথ্য মূল্যায়ন করা হবে। সামনের কয়েক মাসে চূড়ান্ত অর্থাৎ তৃতীয় ধাপের তথ্য মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
সিইপিআই মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, কিউরভ্যাকসহ ৯টি সম্ভাব্য টিকার সহবিনিয়োগকারী।