ডেস্ক নিউজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির আলোকবর্তিকা প্রজ্বলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিংহভাগ কৃতিত্বের অধিকারী। বাঙালি জাতীয়তাবাদের উৎস এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই অঞ্চলের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তির থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আলোচনা পর্বের সূচনা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও অনারারি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ আলোচনা পর্ব উপভোগ করেন।
সভায় মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির আলোকবর্তিকা প্রজ্বলনে সিংহভাগ কৃতিত্বের অধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশের সকল ঐতিহাসিক আন্দোলন-সংগ্রামে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সমৃদ্ধি অর্জনের ধারা অব্যাহত রেখে বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতেও দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারা সমুন্নত রাখবে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের সকল মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার তীর্থ বিদ্যাপীঠ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শিক্ষা ক্ষেত্রে চিন্তা-চেতনায় যে পরিবর্তন ঘটছে তার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। জীবনমুখী, কর্মমুখী শিক্ষা ও গবেষণার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদার মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, এই অঞ্চলের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সকল ঐতিহাসিক, গণতান্ত্রিক ও সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করার জন্য মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গড়ে উঠতে হবে।
অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, বাঙালি জাতিয়তাবাদের উৎস এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই দেশ গড়ার কাজে সর্বাধিক ভূমিকা পালন করছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী বিশ্বমানের মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আলোচনা পর্ব শেষে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।