নিউজ ডেস্ক:
রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাধারণ জনগণ যখন চাইছে ২০ দলীয় জোট থেকে বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে বিতাড়িত করুক, তখন জামায়াতই বিএনপিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। জানা গেছে, বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আমন্ত্রণ পেয়েও জামায়াতের কোনো নেতাই উপস্থিত হননি। এমনকি এ বিষয় নিয়ে বিএনপির প্রতি কোনো সৌজন্যতাও দেখায়নি তারা। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা সমালোচনা। অনেকে বলছেন, জামায়াতকে অবজ্ঞা করার যে সাহস বিএনপি পায়নি, তা দেখিয়ে দিলো শরিক দল জামায়াত।
এদিকে ১৯৯৯ সালে জোটবদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েও জামায়াতের অনুপস্থিতির এই ঘটনাটি বিরল বলেই জানাচ্ছেন বিএনপি নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির দপ্তরের এক নেতা বলেন, বুঝলাম না। জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। ২০ দলের শরিকদের দপ্তর থেকে দাওয়াত দিয়েছি, আর ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। সবাই এলো কিন্তু জামায়াতের কেউ এলো না। এ প্রসঙ্গ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে সমালোচনা হবে বিএনপিকে সে সমালোচনায় ফেলতেই কি জামায়াত এমন করলো!
জামায়াতে ইসলামীর একজন আমির নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নেতারা কে কোথায় যাবেন, কার আমন্ত্রণ গ্রহণ করা হবে আর না হবে সেটি জামায়াতের দলগত বিষয়। এটি নিয়ে বিএনপি কেন, কাউকেই কৈফিয়ত দিতে রাজি নয় জামায়াত। এদিকে অনেকেই সন্দেহ করছেন যে, জামায়াতকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দাওয়াতই দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে জামায়াত ঘনিষ্ঠ অন্য একটি দলের মহাসচিব বলেন, সম্ভবত জামায়াতের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। দাওয়াত দেয়া হলে তাদের সেক্রেটারি জেনারেল আসতেন বলে জানি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় বিএনপি। পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীর দায়ে দলটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ফাঁসি হয় দলটির শীর্ষ বেশকিছু নেতাদের। এমন বাস্তবতায় জামায়াতকে ছাড়ার রাজনৈতিক চাপ বিএনপির ঘাড়ে চাপলেও তা নিয়ে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিএনপি।
এরপর গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে নতুন জোট করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রকাশ্যেই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি তোলে। ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা কামাল হোসেন ভোটের আগে বলেন, জামায়াত জোটে থাকবে জানলে তিনি বিএনপির সঙ্গে আসতেন না।
নির্বাচনের পর ২০ দলীয় জোটের একাধিক শরিক এমনকি বিএনপির শীর্ষ নেতারাও জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের পরামর্শ দিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন। তবে বিএনপি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং এমন বাস্তবতায় জামায়াত নিজেই হয়তো বিএনপি এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।