নিউজ ডেস্ক:
গত এক দশক ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বের কাছে ঈর্ষণীয়। একই রাজনৈতিক দলের টানা তৃতীয় বারের মতো দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি দিন দিন বেগবান হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে অচিরেই এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে আবির্ভুত হবে বাংলাদেশ। এই অপ্রতিরোধ্য অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ। ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালের চেয়ে এর পরিমাণ তিনগুণ বেশি। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ফলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি আরও জোরদার হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিবেচনায় রেখেছে। নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার অধ্যুষিত দক্ষিণ এশিয়ার একটি অত্যন্ত কৌশলগত স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে।
নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মেট্রোরেল, সেতু, টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণ করছে। এতে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ রয়েছে। এর অধিকাংশই চীন ও জাপান থেকে এসেছে। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কৌশল দেশজুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি। এ কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাপানের সুমিতোতো, সোজিৎজ, নিপ্পন স্টিল, শিনওয়া ও মারুহিসার মতো কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
ইউএনসিটিএডি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের চেয়ে এফডিআইয়ে পিছিয়ে আছে। দেশটির এফডিআইর পরিমাণ ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বেসরকারি দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষ নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। বিনিয়োগ সেবাকে বিশ্বমানের করার লক্ষ্যে সম্পুর্ণ অটোমেটেড ও কার্যকর ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেয়ার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন অপার সম্ভাবনার দেশ। এখানে এখন চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব নীতি এবং প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা বিদেশী বিনিয়োগকারীদে আকৃষ্ট করছে। ইতোমধ্যে অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতি, প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে।