ডেস্ক নিউজ
বিদ্যুৎ খাতে অর্থায়নে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বন্ড ইস্যুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ হিসেবে দিতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)। বন্ড ইস্যু নিয়ে প্রায় তিন বছর দফায়-দফায় বৈঠক হলে সম্প্রতি অগ্রগতি দেখছে বিউবো। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্ড ইস্যু করতে পারবে বলে বিউবো সূত্রে জানা যায়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, বন্ড ইস্যুর বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। পিডিবির সঙ্গে কাজ করতে টেন্ডারে কাজ পেয়েছে আইসিবি ও সিটি গ্রুপ গ্লোবাল মার্কেটস। পিডিবি থেকে তাদের কাছে চিঠি দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি জানতে চাওয়া হয়। তবে বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ যথাযথ কাজে ব্যবহার করতে হবে। আমরা সেই টাকা কী কাজে ব্যবহার করব সেটি নিয়েও কাজ করছি। প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেন, শুধু টাকা সংগ্রহ করলেই হবে না তার যথার্থ ব্যবহার করা খুব জরুরি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বন্ড ইস্যুর বিষয়ে গঠিত কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে নিয়ন্ত্রক হিসাব ও অর্থের পক্ষ থেকে বিউবোর বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ কোথায় কী কাজে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে বলেন। বৈঠকে বিউবোর অর্থ পরিচালক জানান, বিউবোর সিস্টেম প্ল্যানিংয়ে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প আছে, সেখানে বন্ডের অর্থের ব্যবহার করা হবে। বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ইসিএ অর্থায়নের
বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার করবে। বৈঠকে বিউবোর দায়িত্বশীলরা জানান, হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় ২৫০ মেগাওয়াট এবং ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ ও ২ নম্বর ইউনিট এলাকায় ২০০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবে বিউবো। কিন্তু এসব প্রকল্পে এখনো অর্থায়নের উৎস নির্ধারণ করা হয়নি। ফলে বন্ডের অর্থ সেখানে ব্যবহার করা যেতে পারে। ইসিএ অর্থায়নে ১৬০০ মিলিয়ন ডলারের যে ঋণ গ্রহণ করেছে। যার সুদের হার কম-বেশি প্রায় ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। এ ক্ষেত্রে বন্ডের সুদের হার যদি ইসিএ অর্থায়নের সুদের হারের চেয়ে কম হয়, তবে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহিত অর্থ ইসিএ অর্থায়নের কিছু অংশ পরিশোধ করা যাবে।
বৈঠকে বন্ড ইস্যুর অর্থ বিনিয়োগের পাঁচটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে এ সংক্রান্ত কমিটি। এর মধ্যে রয়েছেÑ বিউবোর অধীনস্থ কোম্পানি বা যৌথ মালিকানায় নির্মিতব্য উৎপাদন প্রকল্প লাভজনক হলে ঋণ হিসেবে ঋণ দেওয়া হবে। যৌথ মালিকানার প্রকল্পের ইকুইটির রেট অব রিটার্ন বন্ডের সুদের হারের চেয়ে বেশি হলে ইকুইটি হিসাবে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিউবোর নিজস্ব অপারেশনাল ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসাবে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে গৃহীত অর্থ ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পাঁচ বছরের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বন্ড ইস্যুর বিষয়ে জয়েন্ট অ্যারেঞ্জার আইসিবি ও সিটি গ্রুপ গ্লোবাল মার্কেটসকে নিয়োগের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। শিগগিরই তাদের সঙ্গে চুক্তি করবে বিউবো।